মুশফিকুল ফজল আনসারী, জাতিসংঘ সংবাদদাতা
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে ইউনিট হিসাবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মোতায়েন নেই বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক। একিসঙ্গে র্যাবকে নিষিদ্ধ করতে ১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন যে চিঠি পাঠিয়েছে তা যাছাই বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার র্যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি প্রসঙ্গে জাতিসংঘের অবস্থান নিয়ে জাস্ট নিউজকে পাঠানো এক লিখিত প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই মন্তব্য করেন মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র।
গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জাতীয় কর্তৃপক্ষকে তদন্ত নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে ফারহান হক বলেন, "বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে নিয়ে যেসকল অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে আমরা অবগত। সংশ্লিষ্ট জাতীয় কর্তৃপক্ষকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। র্যাব ইউনিট হিসাবে জাতিসংঘের কোনো মিশনে নিয়োজিত নয়।"
জাতিসংঘের কোনবাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করার পূর্বে ঐ দেশকে সংশ্লিষ্ট বাহিনী সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কীনা তা যাচাই করে দেখতে হবে জানান ফারহান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার ইস্যুতে নিজস্ব নীতি অনুযায়ী সদস্য দেশের পাঠানো বাহিনীর সদস্যকে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই মোতায়েন করবে।
র্যাবকে নিষিদ্ধ করতে ১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন যে চিঠি পাঠিয়েছে তা যাচাই বাছাই করে দেখছে ডিপার্টমেন্ট অফ পিস অপারেশনস।
ফারহান জানান, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস স্ক্রিনিং অফ ইউনাইটেড ন্যাশনস পারসোনাল এর নীতি অনুসারে যারা মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সর্বোচ্চ মানের নিষ্ঠা এবং দক্ষতা রয়েছে সেসকল বাহিনীর সদস্যদেরকেই মিশনে নিয়োগ দেয়া হয়।
তিনি বলেন, "জাতিসংঘ তাদের সদস্য দেশসমূহকে মিশনে কাউকে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের যেনো অতীতে কোন ধরনের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নিয়ম লঙ্ঘনের রেকর্ড না থাকে সে বিষয়ে তাগাদা দেয়।"
তিনি আরও বলেন, "মিশনে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয় তাদেরকে বিভিন্নভাবে যাচাই বাছাই করা হয়, যার মধ্যে জাতিসংঘ নীতি অনুসারে মানবাধিকার, আচরণ এবং নিয়মানুবর্তিতা-এসকল বিষয় খতিয়ে দেখা হয়"
উল্লেখ্য, শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে অবিলম্বে বাদ দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ১২টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন। এর পূর্বেও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশে অব্যাহত মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার আহবান জানিয়েছিল বিশ্বসংস্থাটির নিকট।
র্যাবের মানবাধিকার লংঘনের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের ‘পিস অপারেশন’ এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা। বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এমকে/