ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি রাউন্ড টেবিলে এডমিরাল পেপেরো

চীন-বাংলাদেশ মাখামাখি এবং বেল্ট এন্ড রোড স্থাপনের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সতর্ক বার্তা

চীন-বাংলাদেশ মাখামাখি এবং বেল্ট এন্ড রোড স্থাপনের তৎপরতায়  যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সতর্ক বার্তা

স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশের প্রতি সর্তক বার্তা উচ্চারণ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক ফ্লিটের এডমিরাল স্যামুয়েল পেপেরো বলেছেন, ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে চীন বেল্ট এন্ড রোড কেন্দ্রিক যে মরণ ফাঁদ বানানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তা যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে এবং এই তৎপরতা শংকার কারণ।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইন্দোপ্যাসিফিকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা মুক্ত এবং অবাধ। যুক্তরাষ্ট্রকে এসম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি রাউন্ড টেবিলে বাংলাদেশ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন এডমিরাল স্যামুয়েল পেপেরো।

রাউন্ড টেবিলে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন জাস্ট নিউজ সম্পাদক এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী। রাউন্ড টেবিলে অন্যান্যের মধ্যে যোগদেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সীর ডাক বাইন, অস্টেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের জেড ম্যাকমিলান, সাউথ চায়না মর্ণিংপোস্টের রবার্ট ডেলানি, জাপানের কিয়োডো নিউজ এজেন্সীর মিয়া তানাকা, থাইওয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সীর স্টেসি হসু, দ্য স্ট্রেইট টাইমসের নির্মল ঘোষ এবং প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া ( পিটিআই)’র ললিত জহা।

রাউন্ড টেবিলে অংশ নিয়ে ইন্দোপ্যাসিফিকে চীনের ক্রমাগত প্রভাব বিস্তার, বাংলাদেশে এর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর চেষ্টা এবং বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় একটা সরকারের ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকা উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, "বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সম্পর্ক বিষয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাই। দেশটি অভ্যন্তরীণভাবেই সমস্যার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। বন্দর মেরামত এবং ইকোনমিক করিডোর এর নাম ব্যবহার করে বাংলাদেশ বলয় তৈরি করছে চীন। এই করিডোর দিয়ে চায়না তাদের সমৃদ্ধ প্রদেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের একটা যোগসূত্র বানাচ্ছে। পাকিস্তানের পরই চীন থেকে অস্ত্র কেনায় ২য় অবস্থানে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। এটা বুঝেই তারা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নানা কৌশল গ্রহণ করে।

এখন তারা ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীনের সঙ্গে সখ্যতা বাড়াচ্ছে। বন্দর আর অস্ত্র কেনার নামে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অতিমাত্রায় ঝুকে যাওয়াকে আপনারা কিভাবে দেখছেন?

আপনি কী মনে করেন?"

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এডমিরাল পেপেরো বলেন, "আমি সতর্ক - এটাকে বেল্ট এন্ড রোড বলুন কিংবা স্ট্রিং অব পার্লস- যাই বলুন না কেন আমি এটাকে কেন্দ্র করে সংগঠিত কিছু অভিযান নিয়ে সতর্ক রয়েছি। একইভাবে সতর্ক করছি বেল্ট এন্ড রোড সামনে রেখে যে ঋণের ফাঁদ তৈরি হচ্ছে তা নিয়েও। এর পরিণতিতে যেটা ঘটতে পারে সেটা হল বিশেষ ধরণের অভিযানের আয়োজন করা।

তিনি বলেন, আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন, পৃথিবীর ভূ-মানচিত্রে ভারত মহাসাগরের প্রধান ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম মূল কেন্দ্র হিসেবে এর মধ্য দিয়ে বাণিজ্য, সংস্কৃতি লেনদেন এবং মানুষের চলাচল হয়।

চীনের এই অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা জোরালো করে এই শীর্ষ এডমিরাল বলেন, “আমি সবসময় এই ব্যবস্থাগুলি সম্পর্কে সতর্ক রয়েছি। যেমনটি আমরা হামবানতোতা, গাওয়ার এবং জিবুতিতে দেখেছি। এবং আমি সবসময় এগুলোকে শংকার কারণ মনে করি।”

এডিমিরাল পেপেরো বলেন, “এসব সত্ত্বেও সম্প্রতি সম্মিলিত বাহিনীর মেরিটাইম কম্পোনেন্ট কোর্সে রিয়ার এডমিরাল ইকবালের কোম্পানি উপভোগ করার পর, আমি বাংলাদেশ এবং মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিককে সমর্থনকারী দেশগুলির জোটের মধ্যে গভীর অংশীদারিত্বের পথ দেখতে পাচ্ছি। একটি মুক্ত এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের মূল্যবোধে বিশ্বাস করি এবং আমি আপনার এ অভিপ্রায়ে বিশ্বাস করি। আশা করি আপনার এই ধারণার সাথে বাংলাদেশের নেতারাও একমত পোষণ করবেন।”