অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্যই ভিসা নীতি নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে: শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট

অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্যই ভিসা নীতি নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে: শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা

বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তার আগের অবস্থান পুর্নব্যক্ত করেছে। নিজেদের এ অবস্থানের সমর্থনেই কয়েক সপ্তাহ পূর্বে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডেপুটি মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল।

সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই নিজ দেশের অবস্থান তোলে ধরেন প্যাটেল।

গণতন্ত্র এবং ভোট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে গণতন্ত্র এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম সকলেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন এবং এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নে আমাদের এই ভিসা নীতির ঘোষণা।

ব্রিফ্রিংয়ে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের চাপ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসা নীতির কড়া সমালোচনার প্রসঙ্গে উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন ভিসা নীতির প্রতিক্রিয়া বলেছেন যে ভিসা না দেয়া কিংবা  নিষেধাজ্ঞা নিয়ে  মাথাব্যথার কোনো কারণ নেই।  আটলান্টিক শুধুমাত্র মহাসাগর নয়, আরও মহাসাগর আছে। সেদিকে তিনি যাবেন। যদিও তার দলের লোকেরা প্রথমে বর্ণনা করেছিলেন যে নতুন ভিসা নীতি বিরোধীদের জন্য করা হয়েছে যাতে তার সরকারের অধীনে নির্বাচনে আসেন। কিন্তু রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের দলগুলো বিশ্বাস করে না যে শেখ হাসিনা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে যাবেন কারণ তিনি ২০১৪  এবং ২০১৮ সালে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি।তাহলে আপনি কীভাবে বিশ্বাস করবেন যে শেখ হাসিনা একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য , অবাধ এবং নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন?”

জবাবে ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের ব্যাপ্তি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে যার আওতায় বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তাসহ, সরকার কিংবা বিরোধিদল অথবা  গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য যারা দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা করা হবে তাদের বিরুদ্ধে  যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ সকলেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন এবং এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নেই আমাদের এই ঘোষণা।”

গত ৩ জুন দলীয় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে স্যাংশন দেবে, ও নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নেই। ২০ ঘণ্টা জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। আমরা সেসব মহাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করব।”

এনআর/