মানবাধিকার প্রসঙ্গে মোদিকে উদ্বেগের কথা জানাবেন বাইডেন

বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট, ভারতের অবস্থান তাদের নিজস্ব: অ্যাডমিরাল কিরবি

বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট, ভারতের অবস্থান তাদের নিজস্ব: অ্যাডমিরাল কিরবি

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি)’র স্ট্র্যাটিজিক কমিউনিকেশন পরিচালক  অ্যাডমিরাল জন কিরবি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে এবং যেকোনো অবস্থায় গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের বিষয়টি উত্থাপনে দ্বিধা করেননা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরেও এই উদ্বেগ উত্থাপিত হবে। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরের প্রাক্কালে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত এক বিশেষ ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং নির্বাচন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন দেশটির এই শীর্ষ কর্মকর্তা। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবাধ এবং নিরপেক্ষ নিবাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছি। ভারতের অবস্থান তাদের নিজস্ব এবং দ্বিপাক্ষিক বিষয়। এবিষয়ে তারা তাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালাতে পারে। সুতরাং আমরা কেবল আমাদের অবস্থান জানাতে পারি। 

ব্রিফ্রিংয়ে অংশ নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “এই সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আপনার সঙ্গে আমরাও এই সফরের অপেক্ষায় রয়েছি। আপনি কী মনে করেন- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন এই সফরে এ অঞ্চলে গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির মতো বিষয় আলোচনায় গুরুত্ব পাবে? কেননা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার-- এই দুটি বিষয় বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এবং বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত জিজ্ঞাসা-যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। আপনি কী মনে করেন বাংলাদেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যেগের পাশে থাকবে? কারণ ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে দুটি প্রহসনের নির্বাচন আমরা দেখেছি। এবং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়টিও আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি।”

জবাবে কিরবি বলেন, “আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলবো-  প্রেসিডেন্ট বাইডেন পৃথিবীর যে প্রান্তেই যান এবং যে নেতার সঙ্গেই কথা বলেন, সেখানেই তিনি মানবাধিকার বিষয়ে তার উদ্বেগের কথা জানান দেন। এটি প্রেসিডেন্টের জন্য একটি স্বাভাবিক বিষয় এবং তিনি এ অবস্থানে অত্যন্ত দৃঢ়। মানবাধিকার এই প্রশাসনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র এবং সহযোগি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও এর ব্যতিক্রম হবেনা।”

বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন প্রসঙ্গে জন কিরবি বলেন, “আমি মনে করি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতেই পারে। কিন্তু আপনি সঠিক। বাংলাদেশে অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ইতোমধ্যে স্পষ্ট করে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অন্তরায় সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছি।  আমরা কেবল আমাদের অবস্থান জানাতে পারি। আপনি জানেন আমাদের অবস্থানটা কোথায়। এবিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট এবং প্রকাশ্য। ভারত সরকার তাদের দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতেই পারে।”

সর্বশেষ আপডেট : বাংলাদেশ সময় ২১ জুন, ভোর ৩টা ৪৪ মিনিট, যুক্তরাষ্ট্র সময় ২০ জুন, দুপুর ১ টা ৪৪ মিনিট

এনআর/