মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতিবাজদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং তার মিত্র দেশগুলোকে এসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, মিত্র দেশগুলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে সেজন্য দেশটি এসব তথ্য দিয়ে সহায়তা করে।
মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিবে কী না এসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন মুখপাত্র মিলার।
ব্রিফিংয়ে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যান্য দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচার প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি স্টার, স্টেট ওয়াচ ডটনেট, এসিসিপিআরসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রশ্ন করা হয়।
Video Courtesy: Forbes
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতিদমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউয়ের সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে তার সফর শেষ করেছেন। সফরকালে তিনি সরকারের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার সফরের সময়টাতে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে একটি 'বোম্ব শেল' রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টার। সাইফুল আলম যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের একজন সহযোগী, তিনি বিদেশে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। স্টেট ওয়াচ ডটনেট এবং ওসিসিআরপি তাদের রিপোর্টে একই রকমভাবে বাংলাদেশে অন্যদের দ্বারা ব্যাপক দুর্নীতি এবং টাকা পাচার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সংবাদমাধ্যমেকে জানিয়েছেন যে, তার সঙ্গে বৈঠককালে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে-যারা দুর্নীতি এবং টাকা পাচারের সঙ্গে নিজেদেরকে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র কী তাদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে?”
জবাবে মিলার বলেন, “এর আগে অন্য একটি দেশের বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে আমি যেমনটা বলেছি- নিষেধাজ্ঞা দেবার আগে আমরা বিষয়টি নিয়ে কখনো কথা বলিনা। সাধারণ অর্থে একথাটা বলা হয়ে থাকে যে নিষেধাজ্ঞাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর বাইরে আমাদের আরও কিছু হাতিয়ার রয়েছে, যেমন- সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, মিত্র দেশগুলোকে এবিষয়ে আমরা তথ্য দিয়ে থাকি যাতে করে তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।”
স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বলবো তারা যেনো নিজে দেশের দুর্নীতিবাজদের নির্মূল করে। আর সেটা যেনো হয় সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ পন্থা অবলম্বন করে।”
উল্লেখ্য, সোমবার ঢাকাস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতিদমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ।
বৈঠকের পর ১১ জনের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে রিচার্ড নেফিউ বলেছেন, স্যাংশনস ইজ অ্যা টুল।
এনআর/