জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূসকে হয়রানি, তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে বাধা, তানজিলুরের মাকে গ্রেফতার প্রসঙ্গ

বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে জাতিসংঘ: মুখপাত্র ডোজারিক

বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে জাতিসংঘ: মুখপাত্র ডোজারিক

মুশফিকুল ফজল আনসারী, জাতিসংঘ সংবাদদাতা

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টার্গেট করে বাংলাদেশ সরকারের মামলার বিষয়টি জাতিসংঘ খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক। এছাড়া জাতিসংঘ গুরুত্বের সঙ্গে এটা চায় যে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন যেনো অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়।

সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১০০ জন নোবেল বিজয়ী সহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতার লেখা খোলাচিঠি প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন মুখপাত্র ডোজারিক।

ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্প্রতি দেয়া সব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণারত তানজিলুর রহমানের ফেসবুক পোস্টের কারণে তার মা আনিছা সিদ্দিকাকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়।

জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা, যাদের মধ্যে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রয়েছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা একটি খোলাচিঠিতে সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টার্গেট করে বিচার বিভাগের মাধ্যমে হেনস্থা করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন। তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে আয়োজন করার এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর আহবান জানিয়েছেন। ড. ইউনূসের এই সংকটময় মুর্হূতে জাতিসংঘ মহাসচিবের অবস্থান কী? কারণ ড. ইউনূস জাতিসংঘের অনেক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত।”

জবাবে ডোজারিক বলেন, “যেমনটা এর আগেও আমরা বলেছি, জাতিসংঘ খুব গুরুত্বের সঙ্গে চায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন যেনো অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। আর সবাই চায় নির্বাচনটা যেনো অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। প্রফেসর ইউনূসের বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। তার মামলার বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত নই।”

অপর এক প্রশ্নে মুশফিক জানতে চান, “বাংলাদেশে বিরোধীদলের নেতার বক্তব্য সবধরনের মিডিয়ায় প্রচার বন্ধ করতে আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। সোশাল মিডিয়া থেকে বিরোধীদলীয় নেতা তারেক রহমানের সবধরনের বক্তব্য সরিয়ে দিতে আজ বিটিআরসিকে আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণারত তানজিলুর রহমানের ফেসবুক পোস্টের কারণে তার মা আনিছা সিদ্দিকাকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি সদস্য রাষ্ট্রের এমন ঘটনাকে কীভাবে দেখছেন?”

জবাবে ডোজারিক বলেন, “সুনির্দিষ্ট এই বিষয় সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে আমি আবারও বলবো আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই।”

এনআর/