স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিংয়ে পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রসঙ্গ

প্রয়োজন অনুসারে যেকাউকেই নিষেধাজ্ঞা, দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে হবে: মিলার

প্রয়োজন অনুসারে যেকাউকেই নিষেধাজ্ঞা, দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে হবে: মিলার

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিরোধি বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিতে জড়িত যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজন মনে করলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা অনুসারে বাংলাদেশকে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। 

রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তা এবং হামলার ঘটনা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

Video: DoS

ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, "স্থানীয় টিভি নেটওয়ার্ক নিউজ টুয়েন্টিফোর চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শুধু নিজের নয় বরং দূতাবাসের সব কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। তার এই উদ্বেগের বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত। কারণ এই ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে বিগত বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূতদের ওপর হামলার একাধিক ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন কী উদ্বেগের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন?"

জবাবে মিলার বলেন, "দূতাবাস এবং তার কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে এখানে দাড়িয়ে বিশদভাবে না বললেও আমি অবশ্যই যে কথাটা বলতে চাই,  তা হলো- কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ  গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ভিয়েনা কনভেনশনের কূটনৈতিক সম্পর্কের শর্ত অনুসারে প্রতিটি স্বাগতিক দেশ অবশ্যই সকল দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে। পাশাপাশি কূটনীতিকদের ওপর যেনো কোনো ধরনের হামলা না হয় তা বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল বিদেশি দূতাবাস এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"

অপর এক প্রশ্নে এই প্রতিবেদক জানতে চান, "বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে দানবে রুপান্তরিত করতে যেসকল 'মিডিয়া' ভূমিকা রেখেছে তাদেরকে কী ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়েছে?" 

মিলার মুশফিককে পাল্টা প্রশ্ন করে তখন জানতে চান, "আপনি কী বলছেন- আমরা আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ  করতে যাচ্ছি?"

রিপোর্ট প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, "রিপোর্টে আমরা জানতে পেরেছি, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে- আপনারা নিষেধাজ্ঞাকে বিস্তৃত করছেন। অর্থাৎ মিডিয়াসহ সরকার তরফে অপপ্রচারে জড়িতরাও এর আওতায় আসবে।"

দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, "এই পোডিয়াম থেকে এখন আমি নতুন কোনো ঘোষণা করছিনা। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেনের ঘোষণা অনুসারে বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার জন্য দায়ী কিংবা জড়িত থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য, সরকার এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসানীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ আমরা শুরু করেছি। গত ২৪ মে ভিসানীতি ঘোষণার সময় আমরা এটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। আমরা ভিসানীতির কথা বলেছি তবে কারো নাম উল্লেখ করিনি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থে দায়ী কিংবা জড়িত যেকোনো বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এই ভিসানীতি কার্যকর হবে। তবে অন্য যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি আমরা মনে করি তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আমরা এই নীতি প্রয়োগ করবো।"

এনআর/