রাইট টু ফ্রিডমের ওয়েবিনারে বক্তারা

সংঘাত ছেড়ে সংলাপে যেতে হবে ক্ষমতাসীনদের, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর তাগিদ

সংঘাত ছেড়ে সংলাপে যেতে হবে ক্ষমতাসীনদের, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর তাগিদ

বিশেষ সংবাদদাতা

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়াটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে এই সরকার রাজনীতিকরণ করেছে। সরকারকে অবশ্যই জনগণের দাবি শোনা উচিত। আঞ্চলিক অস্থিরতা এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনি সিদ্ধান্ত নিতে হবে--বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে কী না?

সোমবার ওয়াশিংটন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডম (আর টু এফ)’র  এর উদ্যেগে "বাংলাদেশ ইলেকশন'স: ওভারকামিং দ্য ইন্ট্রিগিটি ডিফিসিট" শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারি প্যানেলিস্টরা এসব কথা বলেন।

তারা চলমান সংকট উত্তরণে সরকারকে সংঘাতের পথ পরিহার করে  আন্তর্জাতিক মিত্রদেরসহ সব অংশীদারদের নিয়ে একটি সত্যিকারের সংলাপে বসার তাগাদা দিয়েছেন। দ্রুত সংকট সমাধান না হলে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি সহিংস এবং অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে, দেশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। রাজনৈতিক এই সংকটের মূল্য সাধারণ জনগণকেই পরিশোধ করতে হবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

আর টু এফ’র বোর্ড মেম্বার জন এফ ড্যানিলুয়েচের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ-এর সিনিয়র অ্যাডভাইজর অ্যানতোনিও স্পিনেল্লি, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখওয়াত হোসেন, দ্য নিউ এইজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির, ইউএসএআইডি-এর সাবেক ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এন্ড গভর্নেন্স অ্যাডভাইজর জেফ ভ্যানেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ।

রাইট টু ফ্রিডমের অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম এর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাইট টু ফ্রিডম-এর নির্বাহী পরিচালক মুশফিকুল ফজল আনসারী।

ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ-এর সিনিয়র অ্যাডভাইজর অ্যানতোনিও স্পিনেল্লি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের আর অল্প সময় বাকি রয়েছে। ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে দেশটিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখা গেলেও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতার ঘাটতি ছিলো। নির্বাচন দুটিতে অনিয়ম এবং ভোট কারচুপি হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের কাঠামোতে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। শেষ দুই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।

নির্বাচনের অনিয়মের কারণেই বাংলাদেশে এখন অচলাবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেন অ্যানতোনিও স্পিনেল্লি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে বেশি করা পর্যালোচনা এবং কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। নির্বাচনের আর দুই মাস হাতে থাকলেও অনেক বিষয় অমিমাংসিত রয়ে গেছে।জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহ এবং নির্বাচন কমিশনে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন বলে অভিমত দেন অ্যানতোনিও স্পিনেল্লি।

বর্তমান সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক পরিপক্কতার প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে অ্যানতোনিও স্পিনেল্লি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমঝোতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সত্যিকারের সংলাপ সম্ভব না হলে নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সংস্কার অসম্ভব। তিনি বলেন, নির্বাচন আয়োজন এবং নির্বাচন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য পূর্বশর্ত হল সমঝোতা। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, নির্বাচন ব্যবস্থায় আস্থা ফেরাতে সহিংসতা কমাতে হবে, সব রাজনৈতিক দল, বিচারব্যবস্থা, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ অংশগ্রহণ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের আস্থা ফেরাতে এবং একটি রোডম্যাপ তৈরিতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলে অভিমত দেন তিনি।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য তিনটি জিনিসের দরকার- নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া যেখানে অধিকাংশ ভোটার ভোট দেবার সুযোগ পায়, নির্বাচনের পরিবেশ এবং স্বাধীনভাবে ভোটধিকার চর্চার সুযোগ।

২০১৪ সালের নির্বাচনকে পৃথিবীর গণতন্ত্রের ইতিহাসের কালো অধ্যায় উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে বিনা ভোটেই ১৫৩ আসনে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এটাকে আইনগতভাবে বৈধতা দেয়া গেলেও বাস্তবে তা অনৈতিক। নির্বাচনে যেটা দেখা গেলো সেটা হলো-প্রধান বিরোধী রাজনৈতিকদলসমূহ বয়কট করলো এবং ব্যাপক রক্তপাত ঘটেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১১টি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে যার মধ্যে চারটি নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কারণ এগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা ঠিক যে প্রত্যেক পরাজিত দলই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ   তুলে তবে নির্বাচনের পরিবেশের স্বচ্ছতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে সরকারের একটা শেষ সুযোগ ছিলো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করার। এই নির্বাচনকে কোনোভাবেই সুষ্ঠু বলার সুযোগ নেই। রাতের বেলায় ভোট হয়ে গেছে। কারচুপি করে রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে।

সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে যে এখানে আসলে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার সুযোগ নেই। অন্যরা যা করছে নির্বাচন কমিশনও সেই একই পথ অনুসরণ করছে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ নির্বাচন পরিবেশ নেই। চলমান পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, রিটার্নিং অফিসার এবং জেলা প্রশাসক--এসবের ৯৯ শতাংশই রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমানে নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নামালেও তারা নিজেরা মেজিস্ট্রেটের কথা ছাড়া একশনে যেতে পারে না। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে আমাকে বলেছেন, গত দুটি নির্বাচনে তাদেরকে কিছুই করতে বলা হয় নি। এই হাইব্রিড সরকারের আমলে সবকিছুতে রাজনীতি ঢুকানো হয়েছে।তিনি বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের নূন্যতম পরিবেশ এখন নেই। অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।

দৈনিক নিউ এজ-এর সম্পাদক নূরুল কবীর বলেছেন, সামনে কী তে যাচ্ছে, এটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত দুটি নির্বাচন সরকার সবকিছুকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে আয়োজন করেছিলো। ভোটাধিকার প্রয়োগের নূন্যতম সুযোগ এখন বাংলাদেশে নেই। দেশের মানুষ মুখিয়ে রয়েছে তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবার জন্য।

তিনি বলেন, একজন নাগরিক এবং একইসঙ্গে সাংবাদিক হিসেবে বলতে চাই--জনগণ সুষ্ঠু ভোট চায়। এই দাবিতে লাখো লাখো মানুষ ঢাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। সরকার জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কোনোধরণের কর্ণপাত করছেনা।

সাংবাদিক নূরুল কবির বলেন, সরকারি দল এবং তার মিত্ররা নিজ থেকেই সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে। বিরোধীদল যখনি সমাবেশ ডাকে তখনি তারা শান্তি সমাবেশ নাম দিয়ে পাল্টা সমাবেশের আয়োজন করে। তাদের এই সহিংসতা উস্কে দেওয়া বুঝতে হলে রকেট বিজ্ঞানী হবার প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধীদলসমূহকে আন্দোলন করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছেনা। ক্ষমতাসীন দল নিজেরাই সহিংসতা চায়। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে সহিংসতার মূল উৎস সরকার নিজেই।

নূরুল কবির বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন আয়োজনের একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতির ঘাটতি রয়েছে। তারা নিজেরাই সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। তিনি বলেন, পুলিশ এবং অন্যান্য স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর যে স্ট্যান্ডার্ড দেখা যাচ্ছে তাতে করে এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
স্বচ্ছ নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনগণ এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে চাপ তৈরি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন নূরুল কবির।

তিনি বলেন, পুলিশ এবং প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সবকিছুকেই রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।

বড় আকারের সংস্কারের জন্য সব ধরনের অংশীদারদের নিয়ে সংলাপে বসার আহবান জানান নূরুল কবির।

তিনি বলেন, সময় খুবি সংক্ষিপ্ত। সরকার ভাবছে তারা জিতে যাবে কিন্তু এটি আসলে সহিংসতাকে বাড়িয়ে দিবে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন যা হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণ, রাজনৈতিক দলসমূহ এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কথায় কর্ণপাত করা উচিত সরকারের।

নূরুল কবির বলেন, সরকারের এই কর্তৃত্ববাদী আচরণের শেষ পরিণাম হচ্ছে সহিংসতা। সংকট নিরসনে সব অংশীদারদের সঙ্গে সংলাপে বসা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "আমাকে  অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষা দিতে আসবেন না।" আমি এক সম্পাদকীয়তে বলেছি, প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয়। সেটাই করে দেখান। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সরকারের গা ছাড়া ভাব।

ইউএসএআইডি-এর সাবেক ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এন্ড গভর্নেন্স অ্যাডভাইজর জেফ ভ্যানেস বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের পরিবেশের স্বচ্ছতার বিষয়টি হারতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালের পাঁচ বছর পর দেখা যাবে আমরা একই বিষয় নিয়ে কথা বলছি। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি একদিনের কোনো বিষয় নয়। এর জন্য প্রয়োজন একটি আইনি কাঠামো।

তিনি বলেন, কোন দল ক্ষমতায় বসবে এটার নাম গণতন্ত্র নয়। বরং জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা ক্ষমতায় বসবে।
জেফ ভ্যানেস বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরিবেশ ২০১৪ সালে ছিলোনা। এর মধ্যে পরিবর্তন হয়ে গেছে। সংসদে বিরোধীদল ছাড়াই সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দেওয়া হয়েছে।

সরকার দেশে এক দলের শাসন নীতি পরিচালনা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেফ ভ্যানেস বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশের জন্য রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেছেন, নির্বাচনের স্বচ্ছ পরিবেশের জন্য তিনটি বিষয় প্রয়োজন--নির্বাচনের স্বচ্ছতা, চ্যালেঞ্জ এবং অংশগ্রহণ। অংশগ্রহণ মানে শুধু রাজনৈতিক দলসমূহের অংশগ্রহণ বুঝায় না বরং ভোটারদের অংশগ্রহণ বুঝায়। এর আরেকটি বিষয় হচ্ছে ভোটাররা তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে কী না।

তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা একদিনের কোনো বিষয় নয়। নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু হয় ভোটের ২ বছর পরই। যেমনটা মনে করা হয় যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় হতে নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া শুরু হয় বিষয়টা তেমন নয়।

আলী রীয়াজ বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবস্থার কারণে কর্তৃত্ববাদী নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোটের বিষয়টিকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। হারলে কী হবে--এই ভেবে সরকার ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে চাচ্ছেনা। সরকারের বিদায় নেবার জন্য এখন একটি পথ খোলা থাকা প্রয়োজন। সবাইকে বসে এটা ঠিক করতে হবে যে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কাউকেই যেন অন্যায়ভাবে হয়রানি না করা হয়।

তিনি বলেন, বিরোধী দলের মহাসমাবেশে যে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে তা দিয়েই নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। -এর সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে যে, ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জরিপে দেখা গেছে যে, দেশের ৪৫ শতাংশ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, ২৫ শতাংশ মানুষ চায় ঐক্যমতের সরকার, ৬৯ শতাংশ মানুষ মনে করে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

আলী রীয়াজ বলেন, সামনে আর কোনো পথ নেই। হয় সরকারকে জনগণের কথা শুনতে হবে নতুবা কী ঘটে তা দেখার জন্য সরকারকে অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্ব রয়েছে। তাদেরকে বাংলাদেশের বিষয়ে আরও সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। তাদেরকে সংলাপ এবং সমঝোতার জন্য মধ্যস্থতা করতে হবে। আর যদি তা না হয় তবে যেটা ঘটতে যাচ্ছে সেটা অনিশ্চিত কিছু নয় বরং নিশ্চিত বিষয় বলা যায়। বাংলাদেশে সংঘাত আর তিক্ততার পরিবেশ তৈরি হবে। আর এই সংঘাতে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে তারা এদেশের অভিজাত  শ্রেণী নয় বরং সাধারণ মানুষ।

এফএইচ/