পোশাকশ্রমিকদের ওপর সহিংসতার নিন্দা যুক্তরাষ্ট্রের

পোশাকশ্রমিকদের ওপর সহিংসতার নিন্দা যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকদের ওপর দমন–পীড়নে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শ্রমিকেরা যেন কোনো ধরনের সহিংসতা ও প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ডের ভয় ছাড়াই সভা–সমাবেশ করতে পারেন এবং নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে পারেন, তা সরকারকে নিশ্চিত করতে বলেছে দেশটি।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিক্ষোভকারী পোশাকশ্রমিকদের ওপর সহিংসতা চালানোর নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ সাব্যস্ত করার নিন্দা জানানো হচ্ছে।’

স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত সপ্তাহে রাসেল হাওলাদার নামের ২৬ বছর বয়সী এক কারখানা শ্রমিক ও সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার খবরে আমরা মর্মাহত। এ ছাড়া ঢাকার একটি কারখানার ভেতরে বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে ৩২ বছর বয়সী শ্রমিক ইমরান হোসেনের মৃত্যুতে আমরা শোক প্রকাশ করছি। তাদের পরিবার এবং শ্রমিক সমাজের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই।’

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের চান্দনার ভোগড়া এলাকায় পোশাকশ্রমিকেরা বিক্ষোভ করলে একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আহত হয়ে রাসেল হাওলাদারের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা গাজীপুরের কোনাবাড়ী একটি কারখানায় আগুন দেন। আগুন নেভানোর পর সেখান থেকে ইমরান নামের একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশের অধিকার রক্ষায় আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো তদন্ত করে দেখার আহবান জানাচ্ছি।’

বেসরকারি খাতে যেসব প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের যুক্তিসংগত মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ইউনিয়নের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে, তাদের প্রশংসা করা হয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে। 

পোশাকশ্রমিকদের জন্য যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মজুরি বৃদ্ধি এমনভাবে করতে হবে, যাতে শ্রমিক ও তাদের পরিবার ক্রমশ যে অর্থনৈতিক চাপে মুখে পড়ছে, তার সমাধান নিশ্চিত হয়।