ড. ইউনূস জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, তাঁর প্রতি আচরণ চরম উদ্বেগজনক: মুখপাত্র ডোজারিক

ড. ইউনূস জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, তাঁর প্রতি আচরণ চরম উদ্বেগজনক: মুখপাত্র ডোজারিক Photo: Mushfiqul Fazal, Just News BD

মুশফিকুল ফজল আনসারী, জাতিসংঘ স্থায়ী সংবাদদাতা

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণে জাতিসংঘ চরমভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক।

বাংলাদেশে ড. ইউনূসের প্রতি সরকারের বিদ্বেষমূলক আচরণে উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট করে মুখপাত্র ডোজারিক বলেন, ড. ইউনূস জাতিসংঘের অত্যন্ত মর্যাদা সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা চরম উদ্বেগের।

বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থকদের ড. ইউনূসের গ্রামীণ অফিসসমূহ জোর করে দখলে নেওয়া প্রসঙ্গে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, "নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার দলীয় লোকেরা তার সকল গ্রামীণ অফিসসমূহের দখল নিয়েছে। আপনি হয়তো জানেন যে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি  মামলা দায়ের করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। তাঁর এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কী অবগত রয়েছেন?"

জবাবে ডোজারিক বলেন, "বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব ভালো করেই অবগত রয়েছি। আমি দ্যর্থহীন ভাবে আবারো বলতে চাই,  মি. ইউনূস জাতিসংঘের কাছে খুব মর্যাদাবান একজন ব্যক্তি। তিনি জাতিসংঘের একজন অংশীদার হিসাবে  বছরজুড়ে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচীতে দূত হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল, সাসটেইনঅ্যাবল ডেভেলপমেন্ট গোলসসহ সংস্থার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলোতে তিনি সহযোগিতা করে থাকেন। ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেসকল ঘটনা ঘটছে তা আমাদের চরমভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।"

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমসহ আটটি প্রতিষ্ঠান দখল হওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, "আমরা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছি। কারণ, আমাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন নিজেদের মতো করে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য?"

জানা যায়, আজ সকাল সাতটার দিকে কিছু যুবক গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে এসে জড়ো হন। এ সময় কিছু নারী ঝাড়ু হাতে দিয়ে টেলিকম ভবনের সামনে পাঠানো হয় এবং তারা  ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।

ওই যুবকেরা সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে চেয়ারে বসে থাকেন। আবার কেউ মিছিল করেন। পরে তারা চলে যান। সকাল ১০টা থেকে অফিস সময় থাকলেও এ সময় গ্রামীণ পরিবারের কর্মীদের বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে ওই যুবকেরা চলে গেলে গ্রামীণ টেলিকম ভবনের কর্মীদের কার্ড দেখে দেখে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।

এমআর/