'ড. ইউনূস প্রসঙ্গে পিটার হাসের মন্তব্য যথাযথ'

পণ্য বয়কট প্রচারণার বিষয়ে অবগত, ভোক্তার পছন্দের বিষয়ে মন্তব্য নয়: মুখপাত্র মিলার

পণ্য বয়কট প্রচারণার বিষয়ে অবগত, ভোক্তার পছন্দের বিষয়ে মন্তব্য নয়: মুখপাত্র মিলার Photo: Mushfiqul Fazal, Just News BD

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশে চলমান 'ভারতীয় পণ্য বয়কট' প্রচারণা যুক্তরাষ্ট্র অবগত রয়েছে উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ক্রেতাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করবেনা।

সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশে চলমান 'ভারতীয় পণ্য বয়কট' কর্মসূচি প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে সমর্থন জানিয়ে কথা বলায় যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবি যে দাবি জানিয়েছেন সে প্রসঙ্গে মিলার বলেন, সোজা কথায় বলতে গেলে, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ড. ইউনূস প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, সেটা তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন।

ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করার সময় মিলারকে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা জানান স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী।

রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে উদ্দেশ্য করে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবির মন্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুশফিক জানতে চান, "ম্যাথিউ, আপনাকে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা। আজ রমজানের প্রথম দিন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন করে কথা বলায় বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। আপনি জানেন যে, সরকার রাজনৈতিক কারণে ইউনূসকে হয়রানি করছে এবং সরকারের এরকম আচরণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্রমাগত প্রতিবাদ জানিয়ে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী?"

জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, "আপনি যে মন্তব্যের কথা বলেছেন (পিটার হাসের মন্তব্য) এবং প্রশ্ন করেছেন সে বিষয়ে, অর্থাৎ মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে এর আগেও কথা বলেছি। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা আইনের মাধ্যমে হয়রানি, হুমকি এবং ভীতি প্রদর্শনে এসব আইনের অপব্যবহার হতে পারে। সোজা কথায় বলতে গেলে, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ড. ইউনূস প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, সেটা তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন।"

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় 'ইন্ডিয়া আউট' কর্মসূচি তীব্রতর হবার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুশফিক জানতে চান, "গণমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে 'ইন্ডিয়া আউট' কর্মসূচি ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। বাংলাদেশে জালিয়াতির নির্বাচনের পর দেশটির জনগণ ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রচারণা শুরু করেছে। তাদের অভিযোগ ভারতের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে অদৃশ্যভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?"

জবাবে মিলার বলেন, "এমন কর্মসূচির প্রচারণার বিষয়ে আমরা অবগত। একজন ভোক্তা কী সিদ্ধান্ত নিবেন, সেটা নিয়ে স্পষ্টতই আমি কোনো মন্তব্য করবোনা, সেটা বাংলাদেশ কিংবা বিশ্বের যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে । বাংলাদেশ এবং ভারত উভয়ের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মূল্যায়ন করি। একটি মুক্ত, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লক্ষ্যে দুই দেশের সরকারের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।"

এমআর/