দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন কয়েস লোদী

দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন কয়েস লোদী

সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন চার বারের সিটি কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা কয়েস লোদী এ ঘোষণা দেন।

নগরীর লামাবাজারস্থ একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিসিকের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কয়েছ লোদী জানান, দলের সিদ্ধান্ত মেনে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে তিনি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না।

কয়েস লোদী বলেন, আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সরকারের অধিনে কোনো পাতানো নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির দলীয় এ সিদ্ধান্ত মেনে সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমি কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কয়েস লোদী বলেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অসংখ্য নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানে সেই সকল নেতাকর্মীদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা, দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা; এমনকি দেশের কোটি জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা।

তার ভাষ্য, দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষ নিজের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারছে না, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনায়েদ আহমদ, আনসার আলীসহ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম করে রাখা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে শত শত মামলা চলমান। অসংখ্য নেতাকর্মী আজ কারাগারে বন্দি। আমি নিজেও একাধিক মিথ্যা মামলার আসামী।

২০০২ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেব দায়িত্ব পালন করে আসা কয়েস লোদী বলেন, দীর্ঘ ২০ বছরে আমার ওয়ার্ডবাসী আমাকে যে ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছেন এই ঋণ আমি কোন দিনই শোধ করতে পারব না। যত দিন বেঁচে থাকব তা আমার জীবনে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কয়েস লোদী অভিযোগ করেন, সিলেট সিটি কর্পোরশেন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার এমনকি সিসিকের ৪নং ওয়ার্ডের পানি শাখার কর্মচারী সাইফুর রহমান ইমনসহ নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের বহুসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করে পরবর্তীতে দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি। বিএনপির সাথে আমার সম্পর্ক মা ও সন্তানের মতো। আমি যেহেতু বিএনপির কর্মী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে লালন করি, সেহেতু আমার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার চেয়ে আমার দল ও আমার দেশ বড়। আমার কাছে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।