তারেক মাসুদের পরিবারকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

তারেক মাসুদের পরিবারকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার আটশত ৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রবিবার বিকালে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। গত ২৯ নভেম্বর থেকে রায় ঘোষণা শুরু হয়।

চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে তাঁর স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিচারিক আদালতে করা হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়।

গত ১৬ নভেম্বর এ মামলার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ২৯ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।

ওই দিন আদালতে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা বাস মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সুবহান তরফদার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইহসান এ সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান।

২০১৬ সালের ১৩ মার্চ হাইকোর্টে ক্যাথরিন মাসুদের দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলার শুনানি শুরু হয়। আদালতে ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে সাতজন, বাস মালিক সমিতির পক্ষে পাঁচজন ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

অন্যদিকে এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলার শুনানি আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীর। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। তাতে তারেক-মিশুকসহ মাইক্রোবাসের পাঁচ আরোহী নিহত হন।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। ঘটনার দেড় বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জে মোটরযান অর্ডিন্যান্সে ১২৮ ধারায় বাস মালিক, চালক ও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাসচালক জমির হোসেন, বাস মালিক কাসেদ মিয়া, মুজিবুল হক, মো. তুহিন ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে বিবাদী করা হয়। তাঁদের সবাই জামিনে রয়েছেন।

মামলায় তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ প্রথমে সাত কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৫২ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে ক্ষতিপূরণের দাবি বাড়িয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা করা হয়।

এরপর সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দুটি জনস্বার্থে হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন বাদীরা। মামলায় পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়।

আদালত সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদের আলোকে হাইকোর্টে বদলির জন্য বাদীদের করা আবেদন মঞ্জুর করেন ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫৩৩ঘ.)