ঢাবির ৩ ছাত্রকে ছেড়ে দিয়েছে র‌্যাব

ঢাবির ৩ ছাত্রকে ছেড়ে দিয়েছে র‌্যাব

ঢাকা, ২৩ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন শিক্ষার্থীকে ‘মারধর’ করে র‌্যাব সদস্যরা ‘ধরে নেয়ার’ পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসাইন এবং বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হোসেন।

এদিকে তাদেরকে ধরে নেয়ার খবরে রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-ভাঙচুর করেছেন তাদের সহপাঠীরা।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন, বিজয় একাত্তরসহ কয়েকটি হলের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী টিএসসি ও এর আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ করে। এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে সহকারী প্রক্টর সোহেল রানা ঘটনা সম্পর্কে বলেন, রাস্তায় সাইড দেয়া নিয়ে ক্ষোভ থেকে মোটরসাইকেল আরোহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলাভবনের সামনের রাস্তায় একটি মাইক্রোবাস আটকায়। তারা চালককে বেরিয়ে আসতে বলেন। চালক তাতে সাড়া না দেয়ায় কথা কাটাকাটির মধ্যে মাইক্রোবাসের একটি ‘লুকিং গ্লাস’ ভেঙে দেন তারা। মাইক্রোবাসে ছিলেন র‌্যাবের ৮-১০ জন সদস্য। পোশাকধারী ওই র‌্যাব সদস্যরা নেমে শিক্ষার্থীদের মারধর করে। পরে মটরসাইকেলের চাবিসহ শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে যায় তারা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিজয় একাত্তর হলের বাবু নামের এক ছাত্র বলেন, র‌্যাব সদস্যরা ওই তিন শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করে তাদের মাথায় বন্দুক ঠেকায়। আমরা কয়েকজন ওদিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বন্দুক উঁচিয়ে বারণ করে।

ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাদের র‌্যাব ধরে নেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হল থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশের একটিসহ অন্তত তিনটি গাড়ি তারা ভাঙচুর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান।

বাংলা একাডেমির সামনে একটি গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবিলম্বে আটক তিনজনের মুক্তি দাবি করেন।

তবে ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাঁটাবন এলাকায়।

রাতে ওই এলাকায় মটরসাইকেল আরোহী দুই-তিনজন তরুণ যানজটে পড়ে। সেখানে রাস্তার পাশে র‌্যাবের একটি মাইক্রোবাস ও একটি স্টিকারহীন প্রাইভেটকার দাঁড়িয়েছিল। যানজটের জন্য দোষারোপ করে তারা একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়। তখন র‌্যাব সদস্যরা এসে গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেয়। কেন গ্লাস ভেঙেছে জানতে চাইলে বলেছে, এটা র‌্যাবের গাড়ি তা তারা জানত না।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুফতি মাহমুদ বলেন, ওই শিক্ষার্থীদের আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।

পরে র‌্যাব-১০ এর একটি গাড়িতে করে রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেয়া হয় বলে সহকারী প্রক্টর সোহেল রানা জানান।

এ সময় র‌্যাব সদস্যরা মোটরসাইকেলের চাবিও তার হাতে বুঝিয়ে দেন বলে জানান তিনি।

সহকারী প্রক্টর বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে শিক্ষার্থীদের কেন ধরে নেয়া হল সে বিষয়ে র‌্যাবের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন তারা।

ছাত্ররা কোনো অপরাধ করলে তারা আমাদের জানাতে পারত। ক্যাম্পাসের মধ্য থেকে ধরে নিয়ে গেল কেন, সে বিষয়ে রোববার তাদের ডাকা হবে। ছাত্রদেরও ওই দিন ডেকে বিষয়টির মীমাংসা করা হবে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৪০ঘ.)