বৃটিশ মিডিয়ায় ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য

লন্ডনে ট্রাম্প-মে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

লন্ডনে ট্রাম্প-মে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

লন্ডন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ১৩ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : যুক্তরাজ্যের বাকিংহামশায়ারে অবস্থিত বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন চেকার্স-এ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছেন যুক্তরাজ্যে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। এ সফরের মধ্যে দিয়ে সম্পর্ক আগামী দিনে আরো জোরদার হবে। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছাড়াও আমরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, বৈঠক শেষ হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিস্তারিত অবহিত করবেন।

বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, এ সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সম্পর্কের সব দিক নিয়ে আলোচনা করবো। ব্রেক্সিট ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী মে।

এদিকে বৃটিশ দৈনিক দ্য সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রেক্সিট, যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, লন্ডন সফরকলে বিক্ষোভ, লন্ডন মেয়র সাদিক খান ইত্যাদি প্রসঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের ইমিগ্রেশন নীতিরও কড়া সমালোচনা করেন প্রেসিডেন্ট তিনি।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাম্প ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ব্রেক্সিট ইস্যুতে তার পরামর্শ আমলে নিচ্ছেন না থেরেসা মে। তার মতে, ‘যদি বৃটেন ব্রেক্সিট বিষয়ে ইইউ’র সঙ্গে নমনীয় চুক্তি করে, তাহলে আমরা বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কার্যত বৃটেনের সঙ্গে আলোচনা করবো না। কারণ সেটা হবে ইউরোপিয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার সমতুল্য। এ কারণে সম্ভবত চুক্তিটি নিস্ফল হবে। আমি থেরেসা মেকে বলেছিলাম তার কী করা উচিৎ, কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি।’

ব্রেক্সিট ছাড়াও বৃটেনের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন ট্রাম্প। থেরেসা মে’র মন্ত্রীসভা থেকে সরে পড়া বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বরিস জনসন অসাধারণ প্রধানমন্ত্রী হবেন। তার বিদায় আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’

এছাড়া লন্ডনের লেবার দলীয় মেয়র সাদিক খানের সঙ্গে পূর্বের তিক্ততা আরও নতুনভাবে নিয়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সন্ত্রাসবাদ দমনে লন্ডনের মেয়র কোনো ভূমিকা নিতে পারেননি বলে দোষারোপ করেন তিনি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘মেয়র খুব বাজে কাজ করছেন’।

তার আরেক বিস্ফোরক মন্তব্য ছিল ইমিগ্রেশন নিয়ে। তিনি মনে করেন, ‘লাখ লাখ মানুষকে ইউরোপে প্রবেশ করতে দেওয়াটা’ উচিৎ হয়নি। তিনি এর সঙ্গে লন্ডনে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন।

এছাড়া তার সফরের সময় লন্ডনের আকাশে বিশাল আকারের ট্রাম্পের বিকৃত রূপ দিয়ে বেলুন ওড়ানো হচ্ছে। ডায়পার পরা শিশু ট্রাম্পের বেলুন ও প্রতিবাদ প্রসঙ্গে নিয়ে তিনি বলেন, এসবের ফলে তার মনে হচ্ছে লন্ডনে তিনি স্বাগত নন। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘লন্ডন শহর একসময় তার পছন্দের ছিল, কিন্তু এখন সেখানে যাওয়ার তেমন কারণ খুজে পান না তিনি।’

বৃটিশ রানী ও জনগণ নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তার মা স্কটল্যান্ডের অধিবাসী ছিলেন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মাও রানীকে খুব প্রছন্দ করেন। টেলিভিশনের পর্দায় রাণীকে দেখা গেলে মা দৌড়ে এসে তা দেখেন। রাণীর প্রতি আমারও অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে।’

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭১৮ঘ.)