জাবি ভিসির বিরুদ্ধে অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সিনেটরদের

জাবি ভিসির বিরুদ্ধে অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সিনেটরদের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ব্যক্তিগত-পারিবারিক-গোষ্ঠীস্বার্থ সংরক্ষণ, অধ্যাদেশ পরিপন্থী কাজ করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সিনেটে নির্বাচিত কয়েকজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি।

সিনেট অধিবেশনকে সামনে রেখে শুক্রবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন সিনেটররা।

তারা অভিযোগ করেন- উপাচার্য তার স্বামীকে পিএইচডিতে ভর্তি করিয়ে কমিটিকে অবজ্ঞা করে স্কলারশিপ প্রদান করেছেন এবং ডিগ্রি প্রদানকালে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সভাপতিত্ব করেছেন।

সিনেটররা দাবি করেন, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কেউ পরীক্ষার্থী থাকলে সে পরীক্ষা মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট কোন কাজে কোন শিক্ষক বা কর্মকর্তা অংশ নিতে পারেন না। কিন্তু উপাচার্য তার স্বামীর ডিগ্রি অনুমোদনকালে একাডেমিক কাউন্সিল সভায় সভাপতিত্ব করে এ নিয়ম ভঙ্গ করেছেন।

এ ছাড়া সিনেটরদের অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- একটি গাড়ি ব্যবহার করার বিধান থাকলেও উপাচার্য বিধি ভঙ্গ করে কমপক্ষে তিনটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। আইআইটির পরিচালক পদে বিধিসম্মত শিক্ষককে নিয়োগ না দিয়ে উপাচার্য নিজে পরিচালক পদে আসীন হয়েছেন, উপাচার্যের কার্যালয় সজ্জিত করতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয় ও নিজের সচিবকে প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য বানানোসহ আরও বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সিনেটররা।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপাচার্য তার স্বামীর ডিগ্রি প্রদানের ব্যাপারে বলেন, সভা থেকে চলে গেলেই আরো সুন্দর হতো, কিন্তু থাকলেও আমার কোন ভূমিকা ছিল না। আমি কোন অভিমত দিইনি ওখানে। ডিগ্রি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত ভোটে আমি অংশগ্রহণ করিনি। আর ওখানে তো প্রার্থীর নামও উচ্চারণ করা হয়নি। কাউন্সিল মেম্বাররা ছিল, প্রফেসররা ছিল, তারা তো বলতেই পারত যে আপনি না থাকলেই ভালো। এটা বলাতে তো কোন অসুবিধা ছিল না। আর স্কলারশিপের কথা যেটা বলা হচ্ছে ওটা তো পেয়েছে প্রজেক্ট থেকে ফিল্ডওয়ার্কের ভাতা হিসেবে দু’বার বা তিনবার। অন্যান্য ছাত্ররা ১২টা করে পেয়েছে।

গাড়ি ব্যবহারের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া দু’টি গাড়ি ব্যবহার করি। একটা আমার জন্য, আরেকটা পরিবারের জন্য। বরাদ্দের বাইরে কোন গাড়ি ব্যবহার করিনি। আমার আগের উপাচার্যরাও দু’টি গাড়ি ব্যবহার করেছেন।

কার্যালয় সজ্জার ব্যাপারে ফারজানা ইসলাম বলেন, এখানে কোন বিলাসিতা করা হয়নি। প্রয়োজনীয় সংস্কার আর আসবাবপত্র কেনা হয়েছে। ওটা কি আমার ব্যক্তিগত অফিস? ওটা তো উপাচার্যের কার্যালয়, আমি তো এখানে আজীবন থাকব না।

নিজের সচিবকে উন্নয়ন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য বানানোর ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, আমাকে প্রায়ই বিভিন্ন কাজে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হয়। আমি না থাকলে সঠিক ইনফরমেশনটা পাই না। এ জন্য ও ওখানে আছে অবজারভার হিসেবে, যাতে আমি সঠিক ইনফরমেশন পাই। ও ওখানে সদস্য না, আমার প্রতিনিধি হিসেবে আছে।

আইআইটির ব্যাপারে বলেন, ওই বিভাগে দু’জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল। তাছাড়া শিক্ষকদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক এত বাজে হয়ে গিয়েছিল যে এটা করতে হয়েছে। উপাচার্য প্রয়োজন মনে করলে এটা করতে পারেন।

এমআই