‘গ্যাসের দাম বাড়লে শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাবি জমা দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না’

‘গ্যাসের দাম বাড়লে শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাবি জমা দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না’

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ দশমিক ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। এতে আবাসিকে একচুলা বর্তমান দর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৩৫০ টাকা, দুই চুলা ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৪৪০ টাকা প্রস্তাব করে।

মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের আবেদনের উপর গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীরা গ্যাসের দাম বাড়ানোর যৌক্তিক পূর্বাভাস দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

তাদের মতে, কিছুদিন পরপর জ্বালানির দাম বৃদ্ধি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে। এতে করে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।

শুনানিতে শিল্প বনিক সংস্থা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন গ্যাসের দাম না বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে বলেন, যদি আমরা এমডিজির মতো সাফল্য অর্জন করতে চাই শিল্পে কর্মসংস্থান ছাড়া তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এজন্য ৭০ বিলিয়ন ডলার অর্থ প্রয়োজন। সরকার অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্ত সরকারের স্বল্প মেয়াদি শিল্প উন্নয়ন নীতি অগোছালো। কিন্তু মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন নীতি বেশ ভালো।

তিনি বলেন, শুধু দাম বাড়ানোর সময় আমাদের ডাকা হবে আর বিশ্ববাজারে দাম কমলে কমানোর কোনও উদ্যোগ নেয়া হয় না। ২০১৯ সালে বিশ্বে গড় গ্যাসের দাম ছিল ৬ দশিক ৯ ডলার। গত কয়েক বছরে মজুরি ও অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে আমাদের ২৯ ভাগ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেলে উদ্যোক্তারা দেউলিয়া হয়ে যাবে। এছাড়া নতুন শিল্প উদ্যোক্তা তৈরি হবে না। শিল্প বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এতে কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর যৌক্তিক পূর্বাভাস দেয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ী এই নেতা।

গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করে বিজিএমইএ এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সারাবিশ্বে তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে জ্বালানির দাম কমেনি। আবেদন করার পর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সবেমাত্র গ্যাস সংযোগ পেতে শুরু করেছে। এখন এই দাম বৃদ্ধি কার স্বার্থে করা হচ্ছে?

তিতাসের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ৩৫ ভাগ লভ্যাংশ দিতে চাচ্ছেন কিন্তু আমরা তো দুই-তিন ভাগও ব্যবসা করতে পারছি না। তিনি গণশুনানিকে হাস্যকর আখ্যা দেন।

বিটিএমএ’র সভাপতি মোহম্মদ আলী খোকন বলেন, গার্মেন্টস শিল্প যে ৪০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে তার পেছনে আমাদের ১৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। আপনারা বারবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছেন কিন্তু আমরা যে ইভিসি (ইলেকট্রিক ভলিউম কারেকটর) মিটার চাচ্ছি তা দুই থেকে তিন বছরেও দিতে পারেননি। ফলে গ্যাসের নিম্নচাপ, অপর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসের প্রকৃত ব্যবহারের চেয়ে বিল বেশি দিতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এখন আবার গ্যাসের দাম বাড়লে শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাবি বিইআরসির কাছে দিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না আমাদের।

এমআই