লুণ্ঠিত অর্থ ফেরার সম্ভাবনা না দেখে সরে দাঁড়ালেন ইব্রাহিম খালেদ

লুণ্ঠিত অর্থ ফেরার সম্ভাবনা না দেখে সরে দাঁড়ালেন ইব্রাহিম খালেদ

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

সোমবার (২ মার্চ) ইব্রাহিম খালেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের লুটপাট হওয়া অর্থ ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের অর্ধেকই ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এসব ঋণ ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনাও নেই। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি টেনে তোলা সম্ভব নয় তাই পদত্যাগ করেছি।

ইব্রাহিম খালেদ আরো বলেন, পদত্যাগের কপি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, টাকা আদায় করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। প্রতিদিনই গ্রাহকরা টাকা ফেরত নিতে আসছেন আমার কাছে। এসব কারণে আমি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।

হাইকোর্টের নির্দেশে ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন তিনি উল্লেখ করেন, পিকে হালদারসহ কতিপয় ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি খতিয়ে দেখার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই টাকা উদ্ধারে রিকলরি এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার কথা জানান আদালতকে। সেখানে তিনি বলেন রিকভারি এজেন্ট দিয়ে টাকা উদ্ধারে আমার অভিজ্ঞতা আছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানিসয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের মোট সম্পদ ছিল ৪ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে গ্রাহকদের মধ্যে ঋণ ও লিজ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছছে ৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে আমানতের লুটপাট হয়েছে। আমানতকারীরা জমাকৃত অর্থ ফেরত পাচ্ছে না কয়েক বছর ধরে।