স্ত্রীকে পেটালেন হিরো আলম, তাকে পেটালো শ্বশুরবাড়ির লোকজন

স্ত্রীকে পেটালেন হিরো আলম, তাকে পেটালো শ্বশুরবাড়ির লোকজন

স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকের হাতে মার খেলেন স্যোসাল মিডিয়ার আলোচিত হিরো আলম। তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত উল্লেখ করে হিরো আলম জানান, তাকে অনেক বার নিষেধ করার পরেও কথা শোনেনি। ফলে তাকে চর-থাপ্পর মেরেছিলাম। অপর দিকে স্ত্রীর অভিযোগ হিরো আলম গোপনে বিয়ে করেছেন।

বাড়িতে অনেক দিন পরপর আসেন। কারণে অকারণে শরীরীক ভাবে নির্যাতন করেন। এরই জের ধরে দুই দিন আগে রাতে হিরো আলম স্ত্রীর শয়ন ঘরে শুয়ে থেকে মোবাইলে অন্য একটি মেয়ের সাথে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। ওই সময় তার স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমি (৩০) কথা বলতে নিষেধ করলে হিরো আলম তাকে মারধর করেন।

পরে সুমির বাবা মা তাকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সুমি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে।

হিরো আলম অভিযোগ করে বলেন, পরকীয়ায় বাধা প্রদানের পাশাপাশি এলাকায় তার ডিশ ব্যবসা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য তার চাচা শশুর হারুণ এবং মুকুল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ এই ঘটনা।

হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম এবং স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমি জানান, হিরো আলম ২-৩ মাস পরপর গ্রামে আসে। এসেই সে কারণে অকারণে তার স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন করেন। হিরো আলম ঢাকায় কোন একজন মডেলকে বিয়ে করেছে। ঘটনার দিন রাতে হিরো আলম দীর্ঘ সময় মোবাইলে কোন মেয়ের সাথে কথা বলছে দেখে স্ত্রী সুমি বাধা দেয়। এতে হিরো আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীকে মারধর করে। পরে স্বজনরা স্ত্রীকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সুমি জানান, গত সোমবার রাতে সে ঢাকা থেকে আসে।

খাবারের পর মোবাইলে কোন মেয়ের সাথে কথা বলছিল। আমি নিষেধ করলে বলে আমি ১০টা মেয়ে নিয়ে ঘুরবো, যা ইচ্ছে তাই করবো। আমি ঢাকায় বিয়ে করেছি। এভাবে থাকতে পারলে থাকো না হলে চলে যাও। এক পর্যায়ে আলম তেরে ওঠে আমার ওপর। আমার গলা চেপে ধরে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে জখম করে। আমার ৩ ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো।

তারা আরো জানায়, আশরাফুল হোসেন আলম থেকে হিরো আলম হয়ে যাওয়ার পর থেকেই হিরো আলমের আচার ব্যবহার পরিবর্তন হয়ে যায়। সে মাঝেমধ্যেই বাড়িতে অশান্তি করে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে বিচার করা হলেও হিরো আলম ইদানিং আমার মেয়ের সাথে বেশি দুর্ব্যবহার এবং মারধর করছে। গতকালকের ঘটনায় তার বাবাকে জানালে তিনি বলেন, আপনারা আপনার জামাইয়ের সাথে কথা বলেন। আমরা হিরো আলমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবো।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ির ইনচআর্জ আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, গতকাল রাত ৯টায় আহত অবস্থায় হিরো আলমের স্ত্রীকে ভর্তি করায় তার পরিবারের লোকজন। তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। সেখানে কাপড় বাধা ছিলো।

অভিযোগ অস্বীকার করে হিরো আলম বলেন, দু’চারটা চড়-থাপ্পড় মেরেছি এটা কোন বিষয় না যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সংসার করতে গেলে ঝগড়া বিবাদ হবেই। কাজের সুবাদে আমাকে বাইরে যেতে হয়। আমি ১০ দিন, ১৫ দিন পরপর বাড়িতে আসি। আমি বিয়ে করেছি বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

হিরো আলম বলেন, তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত। তার স্ত্রী তার কোন কথা শোনে না। এ বিষয়টি নিয়েই মূলত ঝগড়াঝাটি হয়। সম্প্রতি তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তার ডিসের ব্যবসা তার স্ত্রীর নামে লিখে দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তার শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করে। তাকে ফাঁসাতেই আহত হওয়ার নাটক করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে দাবী করেন হিরো আলম।

এমআই