যুক্তরাজ্যে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার এক বৃটিশ-বাংলাদেশি পরিবার

যুক্তরাজ্যে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার এক বৃটিশ-বাংলাদেশি পরিবার

যুক্তরাজ্যের লেস্টারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এক বাংলাদেশি পরিবার। দুর্ঘটনায় দুই শিশুসহ নিহত হয়েছেন তিনজন। মারাত্মক আহত অবস্থায় বর্তমানে হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন শিশু দুটির মা। শুক্রবার বিকাল ৪টা ২৪ মিনিটের সময় লেস্টার ও নানিটনের মধ্যবর্তী হিঙ্কলি বারবেজ এলাকায় পণ্যবাহী একটি লরির সাথে তাদের বহনকারী প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই আশপাশের লোকজন পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে খবর দেয়ার পাশাপাশি আহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ইস্ট মিডল্যান্ডস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, লেস্টারশায়ার ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস ও লেস্টারশায়ার পুলিশ।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, আলমগীর হোসেন সাজু (৩০), তার দুই শিশু সন্তান জাকির হোসেন (৯) ও মাইরা হোসেন (৪)। এছাড়া মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন দুই শিশুর মা। নিহত আলমগীরের জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে। বার্মিংহাম শহরের নিকটবর্তী ওয়ালসালের প্লেক শেরিডান স্ট্রিটের বাসিন্দা আলমগীর একজন ব্যবসায়ী। তার পিতার নাম আবদুল কালাম।

আলমগীরের দাদারবাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামে। তার দাদার নাম হাজী আকরাম উল্লাহ।
নিহত আলমগীরের চাচা ফরিদ জানান, শুক্রবার পরিবার নিয়ে একটি ডে ট্রিপে তারা লেস্টার গিয়েছিলেন। ফেরার পথে হিঙ্কলী এলাকায় একটি লরির সাথে সংঘর্ষে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের বহনকারী সিলভার কালারের বিএমডব্লিউ কারটি সম্পূর্ণ ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালকের আসনে থাকা আলমগীর হোসেন ও তার ছেলে জাকির হোসেনের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালের নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে চার বছরের মাইরা হোসেন।

 এদিকে দুই সন্তানসহ তরুণ ব্যবসায়ী আলমগীরের মৃত্যুর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওয়ালসালে। পারিবারিকভাবে অত্যন্ত সুপরিচিত হওয়ায় ওয়ালসালে বসবাসকারী বাংলাদেশিসহ এশিয়ান কমিউনিটিতে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।

এই গুরুতর সংঘর্ষ তদন্ত ইউনিটের গোয়েন্দা কনস্টেবল আনা অ্যান্ড্রু সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন: "এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যারা তাদের জীবন হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সহানুভূতি প্রকাশ করছি। আমরা নিহতদের পরিবারকে পূর্ণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখব এবং সংঘর্ষের তদন্তের জন্য যা ঘটেছে তার সম্পূর্ণ পরিস্থিতি অনুসন্ধান করব। পাশাপাশি এমন মর্মান্তিক ও যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতিতে যারা সাহায্যের জন্য সাড়া দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

এছাড়া ঘটনার তদন্তের স্বার্থে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে তথ্য সাহায্য চেয়েছে লেস্টারশায়ার পুলিশ। তারা বলেছে, "আমরা ইতিমধ্যে আমাদের অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলেছি। আপনারা যারা দুর্ঘটনাটি দেখেছেন বা ঘটনাস্থল দিয়ে যাওয়ার সময় আপনাদের ড্যাশক্যামে যদি কোন ফুটেজ রেকর্ড হয় কিংবা কোনো তথ্য জেনে থাকেন; তবে আমাদের সরবরাহ করুন।”