বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: কাদের

বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: কাদের

আন্দোলন ও নির্বাচন ঠোকাতে ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করতে পারে, তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে।

শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত। কাজেই বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যদি ছেড়ে দিই, তাহলে জনগণের জানমালের সুরক্ষায় সমস্যা হয়। সে জন্য আমাদের মাঠে থাকতে হয়। কোনো পাল্টাপাল্টি নয়, জনগণের সুরক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগকে মাঠে থাকতে হয়। সমাবেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি সুযোগ পেলেই ফণা তুলে রাষ্ট্র ও জানমালের ক্ষতি করবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভোটারদের ভয় পায় বলেই বিএনপি নির্বাচনে আসে না। নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই।

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনো সংঘাতে জড়াব না।’

বিএনপির আমলে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনো ধরনের প্রাণহানি ছাড়া শান্তিপূর্ণ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের সংঘাত হয়নি। এর কৃতিত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারে যে ভোট পড়েছে, খুব ভালো ভোট পড়েছে বলব না, মোটামুটি পড়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপির ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে দলটির অনেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দলটির কারও কথা কেউ শোনেন না।’

ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে থাকা বিএনপি কোনো কিছু আদায় করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মুখে ফুলঝুরি ছড়ালেও ভেতরে তারা হতাশ। যত দিন তারা ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে না আসবে, তত দিন তারা জনবিচ্ছিন্ন থাকবে।

দেশের জনগণকে নয়, পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করে আওয়ামী লীগ টিকে আছে—বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী, পরীক্ষিত বন্ধু। নির্বাচনের সময় তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ভারতকে খুশি করে নয়, জনগণের শক্তিতেই টিকে আছি। ভারতের দয়ায় নয়। পঁচাত্তরের পর কত বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল?’

১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দিবসটি ঘিরে সারা দেশে কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা ফিরে না এলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট হতো না।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যুদ্ধংদেহী ইসরায়েল ফিলিস্তিনের রাফায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই ইসরায়েল সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনিসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা।