‘অসুস্থ শরণার্থী শিশুর জন্য রুদ্ধদ্বার, সীমাহীন লজ্জার'

‘অসুস্থ শরণার্থী শিশুর জন্য রুদ্ধদ্বার, সীমাহীন লজ্জার'

সমুদ্রপথে আগত অসুস্থ শরণার্থী শিশুদেরও প্রবেশ করতে না দেওয়াটাকে ‘সীমাহীন লজ্জার' বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংস্থা মেডিটারেনিয়া৷ এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে তারা৷

গত ২২ ডিসেম্বর মাল্টার জলসীমায় ৩২ শরণার্থী উদ্ধার করা হয়৷ তাদের নৌকাতেই ভাসমান জীবন কাটাতে হচ্ছে৷ কারণ, ইউরোপীয় দেশগুলো শরণার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে৷ গত ২ সপ্তাহ ধরে সমুদ্রেই কাটাচ্ছে অসহায় শরণার্থী পরিবারগুলো৷ মেডিটেরিয়ার কর্মকর্তা আলেজান্দ্রো মেটস এক টুইটার বার্তায় ইউরোপীয় এই আচরণের নিন্দা জানান৷

তিনি উল্লেখ করেন, এই নৌকায় থাকা শিশুদের হাইপোথারমিয়া বা পানিশূন্যতার সংকট হতে পারে৷ এতে তাদের মৃ্ত্যুও হতে পারে৷ উল্লেখ্য, মেডিটেরিয়া সমুদ্রপথে চলাচলকারী অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে৷

সংস্থাটি জানায়, নৌকাটিতে তিন অভিবাবকহীন কিশোর, চার নাইজেরীয় নারী, এবং লিবিয়া ও আইভরি কোস্টের নাগরিক রয়েছে৷ সেখানে দুটি শিশু অবিরাম বমি করছে৷

মানবাধিকার সংস্থা ‘সি ওয়াচ থ্রি মিশন'-এর প্রধান ফিলিপ হান এক রেডিও বার্তায় বলেন, গত বুধবার মাল্টা জলসীমা নিয়ন্ত্রণকারী প্রশাসন নৌকাটিকে সমুদ্র উপকূলে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে৷ এতে করে ঝড় ও ভয়ঙ্কর বাতাস থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে শরণার্থীরা৷ তবে তাঁরা মাটিতে পা রাখতে পারবেন না, কারণ এ বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷

তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে৷ নৌকার পাটাতনে ঘুমাতে হচ্ছে শরণার্থীদের৷ পরিচ্ছন্নতার অভাবে সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে৷

ইতোমধ্যে মেডিটেরিয়া ও সি ওয়াচ যৌথভাবে দুটো সাহায্যকারী নৌকায় খাবার পানিসহ কিছু সরঞ্জাম পাঠিয়েছে৷ সাহায্যকারী দলে এক জার্মান পার্লামেন্ট সদস্যসহ নাবিক ও মানবাধিকার কর্মীরা রয়েছে৷

সাহায্যকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁদের সামনেই এক শরণার্থী পুরুষ পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন৷ তিনি সাঁতরে মাল্টা পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানান সেখানে উপস্থিত আলোকচিত্রী ফ্রেডরিকো স্কোপ্পা৷ তিনি আরো জানান, সেই সময় সাঁতরে কিছুদূর চলে যাওয়ার পর তীব্র ঠান্ডা ও স্রোতের কারণে তিনি হাল ছেড়ে দেন৷ পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়৷

এদিকে জার্মান এনজিও সি-আই ভূমধ্য সাগরে একটি জাহাজের তদারকি করছে৷ এতে ১৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছে৷

সি ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে শরণার্থীবণ্টন ও দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর যে জটিলতা চলছে, তার তীব্র সমালোচনা করে৷ ইতোমধ্যে জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া শরণার্থীদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ইতালি ও মাল্টা৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে/