টিপু সুলতানের নাম মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি

টিপু সুলতানের নাম মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও বীরযোদ্ধা টিপু সুলতানকে পাঠ্যবই থেকে সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কর্নাটক সরকার।

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রাণ হারানো দক্ষিণ ভারতের মহীশুরের রাজা টিপু সুলতান সম্পর্কে কর্নাটকের স্কুলে ইতিহাসের পাঠ্যবইগুলোতে যা যা লেখা আছে সেগুলোই মুছে ফেলার কথা ভাবছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, টিপু জন্মজয়ন্তী উৎসব আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্কুল পাঠ্যবইয়ে যা রয়েছে টিপু সুলতান সম্বন্ধে, সেগুলোও সরিয়ে দেয়ার কথা ভাবছি আমরা। যে কোনো সময় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির।

টিপু সুলতান ছিলেন তৎকালীন মহীশুরের শাসনকর্তা ও বীরযোদ্ধা। নিজ রাজ্যের অধিবাসীদের নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে করতে মৃত্যুবরণ করেন।

তার মৃত্যুর পরই মহীশুর ব্রিটিশদের দখলে চলে যায়। ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বীরযোদ্ধাকে ভারতের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি।

সম্প্রতি বিজেপির এক নেতা দাবি করেন, স্কুলের পাঠ্যবইগুলোতে টিপু সুলতানকে যেভাবে গৌরবান্বিত করা হয় তা বন্ধ করা উচিত। টিপু সুলতান হিন্দুদের ওপর সাংঘাতিক অত্যাচার করতেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন কোডাগু জেলা থেকে নির্বাচিত বিধানসভা সদস্য বিজেপির এ রঞ্জন।

টিপু সুলতানের ওপর দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান জোসেফ। তিনি বলেন, টিপু সুলতানকে ভারতীয় ইতিহাসের একজন ‘খলনায়ক’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।

টিপু সুলতানকে নিয়ে যা বলা হচ্ছে, সেগুলো রাজনৈতিক কথাবার্তা। টিপু সুলতানকে একজন খলনায়ক করে তোলার এই প্রচেষ্টাটা কয়েক বছর ধরেই শুরু হয়েছে, বলেন মি. জোসেফ, যিনি বর্তমানে ‘নলওয়াঢি কৃষ্ণারাজা ওয়াদিয়ার চেয়ার’-এর ভিজিটিং প্রফেসর।

মহীশুর এখন কর্নাটক রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। আগামী মাসে বিরোধী কংগ্রেস মহা ধুমধামে টিপু সুলতানের জন্মদিন উদ্যাপন করতে চলেছে। কিন্তু বিরোধী বিজেপি তার তুমুল বিরোধিতা করছে।

এমজে/