বিশ্বের ৭০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্বের ৭০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

চীনে সংক্রমণ কিছুটা কমে এলেও এখন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়াবহ নতুন করোনা ভাইরাস। এ অবস্থায় সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্বের সব দেশের প্রতি জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংক্রমিত হয়ে আরো চার জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬। এদের সবাই সিয়াটল শহরের কাছে একটি নার্সিং হোমের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন। এর ফলে সিয়াটলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, সামনের দিনগুলোতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ায় আরো তিনজন মারা গেছেন বলে মঙ্গলবার সকালে জানানো হয়েছে। পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫।

আফগানিস্তানের সঙ্গে চমন সীমান্ত পয়েন্ট দু’সপ্তাহের জন্য বন্ধ করেছে তারা। এছাড়া করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, মধ্যপ্রাচ্যে, ভারতে। ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর প্রতি দ্রুততার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের টীকা আবিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন করে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে সৌদি আরব, তিউনিশিয়া, মরস্কো ও সেনেগাল থেকে।

আজ মঙ্গলবার চীনে ১২৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এমন অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস সোমবার রাতে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বিশ্ব এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে রয়েছে করোনা ভাইরাসের কারণে। এটা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিস্তার লাভ করতে পারে। তবে এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ জন্য সব দেশকে এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা ও বিবিসি।

ওদিকে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পর্টার বলেছেন, যেসব মানুষের করোনা ভাইরাস আছে বলে সন্দেহ করা হবে তাদের চলাচল সীমিত করতে ‘বায়োসিকিউরিটি’কে আইন ব্যবহার করা হবে। এ আইনের অধীনে কোনো একজন মানুষ বিশেষ কিছু স্থানে লোকজনের সঙ্গে মিশতে পারবে না। বায়োসিকিউরিটি আইন ২০১৫ সালে পাস হয় অস্ট্রেলিয়ায়। কোয়ারেন্টাইন আইনের স্থানে এই আইনটি করা হয়। কোয়ারেন্টাইন আইন সেখানে কমপক্ষে ১০০ বছর কার্যকর ছিল। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মহামারি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্টিফেন মোরসের মতো বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা ভাইরাসে বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪০ থেকে ৭০ ভাগ আক্রান্ত হতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে আরো ৪৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে মঙ্গলবার। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৮১২। ফলে চীনের পর সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষে। তবে এখানে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯ জন।

দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বলেছেন, তার দেশ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। এ জন্য ২৫২০ কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছেন তিনি।

এমজে/