করোনা ঝুঁকি এড়াতে ৩৩ দেশে স্কুল বন্ধ

করোনা ঝুঁকি এড়াতে ৩৩ দেশে স্কুল বন্ধ

করোনা ভাইরাস থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় অন্তত ৩৩টি দেশ স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি দেশ গোটা রাষ্ট্রে এবং ১৬টি দেশ বিশেষ কোনো শহর, জেলা বা অঞ্চলে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো এ তথ্য দিয়েছে।

মঙ্গলবার পর্যন্ত ইউনেস্কোর হিসাবে, ১৭টি দেশে পুরোপুরিভাবে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারণে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে ৩৬৩ মিলিয়নের বেশি শিক্ষার্থী। আরো ১৬টি দেশে বিশেষ শহর, জেলা বা অঞ্চলে বন্ধ করা হয়েছে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়। এতে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে আরো ৫৬৭ মিলিয়ন শিক্ষার্থী।

গোটা দেশে স্কুল বন্ধ করে দেয়া রাষ্ট্রগুলো হলো- চীন, ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মঙ্গোলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, জর্জিয়া, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, কাতার, উত্তর কোরিয়া, পোল্যান্ড, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর মধ্যে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নেয়ায় চীনের কিছু অঞ্চলের গুটিকয়েক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। জাপানে চলছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। আর দক্ষিণ কোরিয়ায় ছুটি শেষে স্কুল খোলার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে সরকার তা পিছিয়ে দিয়েছে।

বাকি ১৬ দেশের মধ্যে আফগানিস্তান তাদের হেরাত প্রদেশ; ভুটান রাজধানী জেলা থিম্পু, পারো, পুনাখা; কম্বোডিয়া সিয়েম রিপ প্রদেশ; ফ্রান্স ওঁইস ও হ্যত-রিন, কোরসিকা এবং আরো কিছু শহর; জার্মানি বাভারিয়া, নর্দেইন-ওয়েস্তফলেন, ব্রান্দেবার্গ, বাদেন-উর্তামবার্গ ও নিয়েদারসাখসেনসহ কিছু শহর; গ্রিস আচায়ি, জান্তে ও ইলিস অঞ্চল; ভারতের দিল্লি অঞ্চল, কাশ্মিরের জম্মু ও সাম্বা জেলা এবং কেরালার পাথানামথিত্তা ও কোত্তাম জেলা; পাকিস্তানে সিন্ধ প্রদেশ; ফিলিস্তিন পশ্চিম তীর; ফিলিপাইন ম্যানিলা সিটি, কালাবারজোন, মধ্যাঞ্চলীয় লুজন ও ইয়োকস অঞ্চল; যুক্তরাষ্ট্র ক্যালিফোর্নিয়া, কোলোরাডো, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ইডাহো, ইলিনয়স, ইন্ডিয়ানা, কেন্টাকি, ম্যাসাচুসেটস, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, রোডে আইল্যান্ড, সাউথ ক্যারোলিনা, টেনেসে, ভার্জিনিয়া, ভারমন্ট ও ওয়াশিংটন; ব্রিটেন ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড টেটবুরি, নর্থউইচ, মিডলসবারা ও ব্রিক্সাম, ইউক্রেন চেরনিবৎসি ওব্লাস্ত; পর্তুগাল ও স্লোভাকিয়া বেশ কিছু অঞ্চল ও শহরে এবং ভিয়েতনাম হ্যানয়, হো চি মিন সিটিসহ বেশ কিছু শহর ও অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে।

চীন, ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মঙ্গোলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, জর্জিয়া, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, কাতার, উত্তর কোরিয়া, পোল্যান্ড, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আফগানিস্তান, ভুটান, কম্বোডিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, পর্তুগাল, যুক্তরাষ্ট্র, স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন, পর্তুগাল ও ভিয়েতনাম- এই ৩৩টি দেশের মধ্যে চীন, ইতালি, ইরান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি কিছুটা নাজুক হলেও কিছু দেশের পরিস্থিতি তেমনটা গুরুতর রূপ নেয়নি। তবে সচেতনতার স্বার্থেই দেশগুলোর সরকার শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় এবং মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের করোনাভাইরাস ঠেকাতে স্কুলসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

যেমন বুধবার (১১ মার্চ) পর্যন্ত মঙ্গোলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে একজন, ভুটানে একজন, আজারবাইজানে ১১ জন, পাকিস্তানে ১৯ জন, সৌদি আরবে ২০ জন, কাতারে ২৪ জন, পোল্যান্ডে ২৫ জন, ফিলিস্তিনে ২৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। মঙ্গোলিয়া-ভুটানের মতো দেশগুলোর সরকার বলছে, পরিস্থিতি প্রতিকূলে যাওয়ার আগেই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়া বন্ধ করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ দিকে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় বলে জানায় সরকারের আইইডিসিআর। তবে ১১ মার্চ তারা জানিয়েছে, এ তিনজনের মধ্যে দু’জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। শিগগির তারা ছাড়পত্র পাবেন। যদিও সন্দেহভাজন হিসেবে আরও আটজনকে আইসোলেশনে (বিচ্ছিন্ন করা) নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সেলফ বা হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে অনেককে।

এমজে/