জর্জ ফ্লয়েডের শেষ বিদায়ে জাতিগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ডাক

জর্জ ফ্লয়েডের শেষ বিদায়ে জাতিগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ডাক

পুলিশি হেফাজতে নিহত আফ্রিকান আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডকে শেষ বিদায় জানাতে আসা মানুষেরা জাতিগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার টেক্সাসের হিউস্টনের একটি গির্জায় তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। বক্তারা তাকে স্মরণ করতে গিয়ে বলেছেন, তার অপরাধ ছিল কালো হয়ে জন্মানো। এতে প্রায় ৫০০ রাজনীতিক ও সেলিব্রেটি উপস্থিত হয়েছিলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপোলিসে পুলিশি হেফাজতে হত্যার শিকার হন জর্জ ফ্লয়েড। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে নিরস্ত্র ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ডেরেক চাওভিন নামের এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য। এই হত্যার প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় জড়িত চার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

গির্জা থেকে শোভাযাত্রা সহকারে জর্জ ফ্লয়েডের কফিন হিউস্টন মেমোরিয়াল গার্ডেনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মায়ের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।

নিহত ফ্লয়েডের এক ভাগনি ব্রুক উইলিয়ামস সুবিধাবঞ্চিত কৃষ্ণাঙ্গদের নিপীড়নের জন্য প্রণীত আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কেন এই ব্যবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত হতে হবে? আফ্রিকান-আমেরিকানদের ব্যর্থ করার আইন রয়েছে। এই আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন। কোনও হেট ক্রাইম চাই না। কে জানি বলেন, মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন। কিন্তু আমেরিকা কখন মহান ছিল?

নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বি জো বাইডেন শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যখন জর্জ ফ্লয়েডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সত্যিকার অর্থে আমেরিকায় জাতিগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাব।

গত সপ্তাহে ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা করা বাইডেনের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের ভোট রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বলেছেন, আফ্রিকান-আমেরিকানরা ট্রাম্পকে ভোট দিলে তারা কৃষ্ণাঙ্গ নয়।

স্থানীয় ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসম্যান আল গ্রিন বলেন, জর্জ ফ্লয়েড নেই, তাই আমরা এখানে। তার অপরাধ ছিল কালো হয়ে জন্মানো।

প্রবীণ সিভিল রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট রেভারেন্ড আল শার্পটন বলেন, বিশ্বজুড়ে আমি দেখতে পাচ্ছি দাস ব্যবসায়ীদের নাতি-নাতনিরা দাস ব্যবসায়ীদের মূর্তি ভেঙে ফেলছে। ঈশ্বর প্রত্যাখ্যান পাথর ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়ার যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেটির মধ্যমণি করেছেন।

মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়াল্জ ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড নীরবতা পালন করে জর্জ ফ্লয়েডকে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এমজে/