নতুন শান্তিচুক্তিতে লাভ আজারবাইজানের

নতুন শান্তিচুক্তিতে লাভ আজারবাইজানের

নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আবারও শান্তিচুক্তি করেছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে কারাবাখে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

চুক্তিমতে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই পক্ষই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিতে ‘জয়’ হয়েছে আজারবাইজানের।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এ চুক্তিকে নিজ দেশের জন্য একটি গৌরবজনক বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

অন্যদিকে চুক্তিটিকে নিজের ও নিজ দেশের জনগণের জন্য বেদনাদায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান।

তিনি জানিয়েছেন, চুক্তি মেনে না নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। যুদ্ধ বন্ধের জন্য চুক্তি প্রয়োজন ছিল। তবে এই চুক্তি তাকে এবং তার দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে।

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, চুক্তি সই হওয়ার পরেই আর্মেনিয়ার রাজধানীতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ চুক্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।

স্বাভাবিক ভাবেই চুক্তিটিকে স্বাগত জানিয়েছে আজারি প্রশাসন। আজেরি প্রেসিডেন্ট ইলহাম বলেছেন, আজারবাইজানের সামরিক সাফল্যের কারণে আর্মেনিয়া সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে কোনও রক্তপাত ছাড়াই আমরা আমাদের এলাকা ফেরত পাবো।

ইলহাম আলিয়েভ জানিয়েছেন, শুধু রাশিয়া নয়, তুরস্কের সেনাও সীমান্তে মোতায়েন করা হবে। তারাও শান্তির পক্ষে কাজ করবে।

চুক্তির পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারের বলেছেন, চুক্তি যাতে রক্ষিত হয়, তার দিকে নজর রাখা হবে। কোনো পক্ষই যাতে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখা হবে।

তিনি বলেন, বিতর্কিত অঞ্চলে এবং দুই দেশের সীমান্তে রাশিয়ার প্রায় দুই হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। যারা শান্তির জন্য কাজ করবে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবন্দিদের দ্রুত হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।

এ ছাড়া আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সীমান্ত খুলে দেয়া হবে। যে সীমান্ত ব্লকেড তৈরি করা হয়েছিল, তা আর থাকবে না।

এদিকে নাগোরনো কারাবাখে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে রাশিয়া। মস্কোর মধ্যস্থতায় ইয়েরেভেন ও বাকুর মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরা সেখানে পৌঁছে।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর রোববার আর্মেনীয় দখল থেকে কারাবাখের দ্বিতীয় শহর শুশা দখলমুক্ত করেছে আজারবাইজান।

২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নাগোরনো-কারাবাখে নতুন করে সংঘাতে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাস্থতায় তৃতীয় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে উভয় দেশ।

আর্মেনীয় হামলায় এ পর্যন্ত শতাধিকের বেশি আজারবাইজানি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের অঞ্চল। সেখানে আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠী দখলে রেখেছে। ১৯৯০ এর দশকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।