বিরোধীদের জেলের ভয় দেখাচ্ছেন এরদোগান!

বিরোধীদের জেলের ভয় দেখাচ্ছেন এরদোগান!

২০১৯ সালে বহুল আলোচিত ইস্তানবুল সিটি নির্বাচনে বড় ধাক্কা খায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের দল। মেয়র পদে নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী হেরে যাওয়ায় বিরোধীদের বিষয়ে সতর্ক এরদোগান। তিনি বিরোধীদের জেলের ভয় দেখাচ্ছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে৷ খবর ডয়েচে ভেলের।

তুরস্কের রাজনীতিতে সম্প্রতি একটি নাম বেশ জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে; সেটি হচ্ছে– ক্যানান কাফতানিগলু। তিনি দেশটির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা। ৪৮ বছর বয়সী ক্যানান একজন চিকিৎসক৷ ২০১৮ সালে তিনি সিএইচপি দলের ইস্তানবুলের প্রধানের দায়িত্ব পান৷ জনপ্রিয়তার বিচারে তুরস্কের রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনি অনেকটাই এগিয়ে। বামপন্থী এই নেতা সরকারের বিরুদ্ধে বেশ সরব।

২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের দলের প্রার্থী হেরে গিয়েছিলেন৷ জিতেছিলেন রিপাবলিকান পিপলস পার্টির একরেম ইমামঅলু৷ একরেমের জয়ের নেপথ্যে ছিলেন ক্যানান কাফতানিগলু। এই পরাজয় মেনে নিতে পারেননি দোর্দণ্ড প্রতাপশালী তুর্কি শাসক। তিনি পরবর্তী নির্বাচন মাথায় রেখে বিরোধীদের দমিয়ে রাখায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন।

মেয়র নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যানানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷ তার বিরুদ্ধে মানহানি, জনগণের মধ্যে ঘৃণা ও সহিংসতা উসকে দেওয়া, ‘সন্ত্রাসী প্রোপাগান্ডা' ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রেসিডেন্ট ও তুর্কি রাষ্ট্রকে অপমান করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ক্যানানের সমর্থকরা বলছেন, ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে করা এই বিরোধী নেতার বিভিন্ন টুইটকে মামলায় প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ সিএইচপির নেতারা বলছেন, ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচনে হারের প্রতিশোধ নিতে ক্যানানকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷ ক্যানান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং আপিল করেছেন৷ আপলি প্রক্রিয়া চলমান থাকায় তাকে এখন গ্রেফতার করা যাবে না৷

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের যোগাযোগ পরিচালক ফারেতিন আলতুনের বাড়ির ছবি তোলায় সিএইচপির আরেক নেতা সুয়াত ওজাগদাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে আনাতোলিয়ার পাবলিক প্রোসিকিউটরের কার্যালয়ে৷ ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের' দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তার পাঁচ বছরের জেল হতে পারে৷ সরকারি জমিতে অননুমোদিত নির্মাণকাজের তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে এই ছবি তুলেছিলেন ওজাগদাস৷ তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছেন ক্যানান।

এই টুইটে ক্ষুব্ধ হয়ে আনাতোলিয়ার পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় ক্যানানের বিরুদ্ধে অপরাধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ বছরের জেল হতে পারে৷

তবে ক্যানানও ছেড়ে দেওয়ার মতো নেতা নয়। তিনি এরদোগান ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। ইস্তানবুলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন রেক্টর নিয়োগের বিরুদ্ধে চলা শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়েছিলেন ক্যানান৷ সে জন্য তাকে সন্ত্রাসী বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামহানির মামলা করেন ক্যানান। তিনি মনে করেন, ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচনের হার মেনে নিতে পারেননি এরদোগান, এ কারণে তাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে৷

এমজে/