‘মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে’

‘মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে’

ইথিওপিয়ার তাইগ্রে ও আশপাশের অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ চলছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান মার্ক লুকক। খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে এ অঞ্চলে। সেখানকার বাসিন্দারা এখন মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

ওই অঞ্চলের পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘ সমর্থিত একটি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে— যুদ্ধবিধ্বস্ত তাইগ্রের পাশাপাশি আমহারা এবং আফারের তিন লাখ ৫০ হাজার মানুষ ‘গুরুতর সংকট’ পার করছেন।

তাইগ্রের একটি অঞ্চল কাফতা হুমেরা অঞ্চলের লোকজন জানান, তারা এই সপ্তাহে অনাহারে ছিলেন।

ওই এলাকার এক কৃষক বলেন, আমরা লুকিয়ে রাখা ফসল খেয়ে কিছু দিন পার করেছি। কিন্তু আমাদের কাছে এখন আর অবশিষ্ট কিছু নেই।

‘কেউ আমাদের কোনো সহায়তা দিচ্ছে না। এখানে প্রায় সবাই মৃত্যুর অপেক্ষা করছে। ক্ষুধার কারণে আমাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত’, যোগ করেন তিনি।

ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। যে কারও চেহারার দিকে তাকালে আপনি ক্ষুধা দেখতে পাবেন।

ওই অঞ্চলের একজন ফোনে বলেন, আমাদের হাতে কিছু নেই খাওয়ার মতো।

না থাকার কারণও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানান, যুদ্ধ চলার সময় তাদের ফসল এবং গৃহপালিত পশু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা বিদ্রোহীরা তাদের সহায়তা চাইতেও বাধা দিচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, তারা দেখেছেন ত্রাণের গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে কেউই জানতে চাননি।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান মার্ক লুকক বলেন, এই এলাকায় দুর্ভিক্ষ চলছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

তাইগ্রেতে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ে ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৭ লাখ মানুষ।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, খাদ্য এবং কৃষি সংস্থা ও ইউনিসেফ এ সংকট দূর করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

এর আগে ১৯৮৪ সালে যুদ্ধ এবং খরার কারণে ইথিওপিয়ার তাইগ্রে এবং ওলো প্রদেশে প্রায় ছয় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইথিওপিয়ার ফেডারেল সেনাবাহিনী এবং তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমদে গত বছরের নভেম্বরে সংঘাত শেষ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরও সংঘাত থামেনি। সূত্র: বিবিসি

এমজে/