হাইতির প্রেসিডেন্টকে গুলি করে হত্যা

হাইতির প্রেসিডেন্টকে গুলি করে হত্যা

হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসকে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা।
দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লদ জোসেফ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজের বাড়িতে হামলার শিকার হন প্রেসিডেন্ট ময়িস। ওই ঘটনায় তার স্ত্রীও আহত হয়েছেন।

৫৩ বছর বয়সী জোভেনেল ময়িস ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে হাইতির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছিল। তার আমলে দেশটি প্রায়ই সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জর্জরিত হয়েছে।

ময়িসের মৃত্যুতে “জাতির সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে” বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী জোসেফ । ময়িস খুনের ঘটনাকে ‘অমানবিক ও বর্বর কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

বিবিসি জানায়, এবছরের শুরুতেও হাইতির রাজধানী ও অন্যান্য কয়েকটি শহরে ময়িসের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরই তীব্র বিক্ষোভের ‍মুখে পড়েছিলেন।

হাইতির বিরোধীদলের দাবি, ময়িসের পাঁচবছর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল এবছর ৭ ফেব্রুয়ারিতেই। তবে ময়িস দাবি করেছিলেন, ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব গ্রহণ না করায় আরও একবছর তার মেয়াদ আছে।

ডিক্রিবলে একবছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন ময়িস। এ বছর ৭ ফ্রেব্রুয়ারিতে ময়িস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার সরকারকে উৎখাত করা এবং তার প্রাণনাশের চেষ্টার কথা জানিয়ে বলেছিলেন এ চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।

লাগাতার অস্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক বিভাজন, প্রাকৃতিক দুযোর্গ-দুর্বিপাক ও মানবিক সঙ্কটে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্যতম গরিব দেশে পরিণত হয়েছে হাইতি। দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়তে থাকার মধ্যে প্রেসিডেন্ট খুনের এ ঘটনা ঘটল।

অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী জোসেফ বেতারে এক সাক্ষাৎকারে জানান, “প্রেসিডেন্ট ময়িস গুলিতে আহত হয়ে পরে মারা গেছেন। পুলিশ ও সেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও হামলার পর রাজধানী জুড়ে শোনা গেছে গুলির আওয়াজ।”

বিভিন্ন সন্ত্রাসী চক্র রাস্তার দখল নিতে একে অপরের সঙ্গে এবং পুলিশের সঙ্গে লড়ার কারণে হাইতির রাজধানীতে সহিংসতা বেড়েছে। দারিদ্র এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বেড়ে যাওয়ায় ঘটছে এই রক্তক্ষয়।

দেশটির অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সেখানে তাদের দূতাবাস বন্ধ রেখেছে। ওদিকে, ডোমিনিকান রিপাবলিক বলেছে, তারা হাইতির সঙ্গে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে।