দুই ইমামকে চাকরিচ্যুত করল ফ্রান্স

দুই ইমামকে চাকরিচ্যুত করল ফ্রান্স

‘মূল্যবোধের পরিপন্থী’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুই মসজিদের দুইজন ইমামকে চাকরিচ্যুত করেছে ফ্রান্স।

এরমধ্যে একজনকে ঈদুল আজহার খুতবায় নারীদের নিয়ে কোরআনের আয়াত ও হাদিস বলার কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাকিজনকে কিছু মুসলিম নারীর পোশাকের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ার কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন এক টুইট বার্তায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তুরস্কভিত্তিক ডেইলি সাবাহার খবরে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের পেই দ্য লা লোয়ার অঞ্চলে ঈদুল আজহার সময় কোরআনের আয়াত এবং হাদিসের রেফারেন্সে খুতবা দেওয়ার কারণে একজন ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

চাকরিচ্যুত ওই ইমামের নাম মামাদি আহমাদি। তিনি ‘গ্রেট মস্ক অব সেইন্ট চামন্ড’ মসজিদের ইমাম ছিলেন।

খবরে বলা হয়েছে, ঈদুল আজহার দিন ফ্রান্সে খুতবায় কমোরোস বংশদ্ভূত ইমাম মামাদি আহমাদি -নবী মোহাম্মাদ সা. এর স্ত্রীদের উদ্দেশ্যে নাজিল হওয়া সূরা আহজাব থেকে আয়াত পাঠ করেন।

ওই খুতবার একটি ভিডিও ক্লিপ ফ্রান্সের রিপাবলিকান পার্টির মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের সদস্য ইসাবেল সারপ্লি অনলাইনে শেয়ার করেন।

এরপর ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোয়ার অঞ্চলের সরকারি দপ্তরকে ইমাম মামাদি আহমাদিকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেন। এছাড়া ওই ইমাম যেন আর ফ্রান্সের রেসিডেন্স পারমিট (বসবাসের অনুমতি) না পান তারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই ইমামের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য এবং তিনি লিঙ্গ সমতাবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।

ঘটনার পর ইমাম মামাদি বলেন, তার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ অপ্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের (মুসলিম) নারীদের বাড়ির মধ্যে বসে থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়নি। শরীয়ত মেনে তারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট সবই হতে পারবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় মসজিদ প্রশাসন -ইমাম মামাদিকে পদচ্যুত করার কথা জানিয়েছে।

লোয়ার অঞ্চলের সরকারি দপ্তর জানিয়েছে, ওই ইমামের আবাসিক সুবিধা আর যাতে নবায়ন না হয় তার জন্য তারা কাজ করছেন।

এ বিষয়ে এক টুইট বার্তায় ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দারমানিন বলেন, আমার অনুরোধে অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দেওয়া দুই ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। যারা আমাদের দেশের আইনের বিরোধীতা করবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ব।

এদিকে, ফ্রান্সের অসংখ্য মানুষ ইমাম মামাদি আহমাদির পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। তার পক্ষে অনলাইনে একটি পিটিশন খোলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইসলাম বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছেন।