বিশ্ব ক্রমেই বিভক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আমরা অতল গহ্বরের প্রান্তে রয়েছি এবং ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, এর আগে পৃথিবী কখনও এতো বেশি হুমকির সম্মুখীন কিংবা বিভক্ত হয়নি।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের জীবদ্দশায় সবচেয়ে বড় ধরনের সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এই প্রলয়ঙ্করী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের সজাগ হতে হবে।
বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। এ বিষয়ে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আলোচনা করতে হবে। পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে আলোচনায় বসতে হবে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিশ্ব ক্রমেই দুটি ভিন্ন অর্থনীতি, বাণিজ্য, আর্থিক ও প্রযুক্তিগত নিয়মনীতি, কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার উন্নয়নে দুটি স্বতন্ত্র পন্থায় বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি দুটি পৃথক সামরিক ও ভূরাজনৈতিক কৌশলে বিভক্ত হয়ে পড়ছে পৃথিবী। এটি স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো সংকট বয়ে আনবে।
করোনা মহামারি ও জলবায়ু সংকট নিয়েও কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে ইথিওপিয়া থেকে ইয়েমেন এবং এর বাইরে অস্থিরতা শান্তি বিঘ্নিত করেছে। অবিশ্বাস ও ভুল তথ্যের ঢেউ মেরুকরণ তৈরি করছে এবং সমাজকে পঙ্গু করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি। বিশ্বে আরেকটি রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এটি হচ্ছে অবিশ্বাসের রোগ।’
সামরিক শাসনের বিস্তার ঠেকানোকে অগ্রাধিকার দিতে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। ভাষণে তিনি বলেন, দেশে দেশে সামরিক শাসন ফিরে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের অভাব থাকায় এসব ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক বিভক্তি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পথে বাধা। এটা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের সক্ষমতাকে সীমিত করে দেয়।’
আন্তোনিও বলেন, বিজ্ঞানে উত্তীর্ণ হলেও আমরা নীতিশাস্ত্রে ফেল করছি। নানা চ্যালেঞ্জের মুখে আমরা বিনয়ের বদলে ঔদ্ধত্য দেখতে পাচ্ছি। সংহতির পথে হাঁটার পরিবর্তে আমরা ধ্বংসের শেষ প্রান্তে রয়েছি।