ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ১২ বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠি

প্রতিবাদীদের বাড়িঘর ভাঙা সংবিধানের সঙ্গে মস্করা

প্রতিবাদীদের বাড়িঘর ভাঙা সংবিধানের সঙ্গে মস্করা

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী মুসলিম নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাজ্য কর্তৃপক্ষ যে সহিংসতা ও নিষ্পেষণ চালাচ্ছে সে বিষয়ে আদালতের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছে। ১৪ই জুন এক চিঠির মাধ্যমে যারা এমন আর্জি জানিয়েছেন তাদের সংখ্যা ১২। এর মধ্যে আছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক তিনজন বিচারক। বাকিরা দেশের প্রথম সারির নাগরিক। তারা প্রতিবাদী ব্যক্তিদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়াকে ‘সংবিধানের সঙ্গে মস্করা’ বলে উত্তর প্রদেশ প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

ওই চিঠিতে তারা বুলডোজার দিয়ে প্রতিবাদীদের বাড়িঘর ভেঙে দেয়াকে আইনের শাসনের এক অগ্রণযোগ্য বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছেন। এ বিষয়ে আদালতকে সুয়োমোটো দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এই চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডি, ভি গোপালা গৌড়, একে গাঙ্গুলি ছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন হাইকোর্টের সাবেক তিনজন বিচারক, ৬ জন আইনজীবী।

বিজেপির সাময়িক বরখাস্তকৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের পর ১০ই জুন যে সহিংসতা হয়, তাতে জাভেদ আহমেদ জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তার বাড়িতে বুলডোজার চালায়।

শাহারানপুরের আরও দু’ব্যক্তি সহিংসতায় জড়িত ছিলেন, এই অভিযোগে তাদের কথিত বেআইনি সম্পদও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়া হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, যে সুসমন্বিত উপায়ে পুলিশ এবং ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক কর্তৃপক্ষ মিলে অভিযান চালিয়েছে তাতে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এভাবে বাড়িঘর ভেঙে দেয়া বিচার-বহির্ভূত এক ধরণের শাস্তি।

এখন পর্যন্ত সহিংসতার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের আটটি জেলা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৩৩৩ জনকে। ১০ই জুনের সহিংসতায় এফআইআর করেছে ১৩টি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে নেয়া তরুণ যুবকদেরকে লাঠি দিয়ে প্রহারের ভিডিও পাওয়া গেছে। কোনো নোটিশ না দিয়ে বা কোনো কারণ না জানিয়েই প্রতিবাদীদের বাড়িঘর ভেঙে দেয়া হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিবাদীদের প্রহার করা হয়েছে। এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে জাতির বিবেকে নাড়া লেগেছে। এমন সঙ্কটের সময়ে মেধা যাচাই করা হয় বিচার বিভাগের। অতীতে জনগণের অধিকারের অভিভাবক হিসেবে ব্যতিক্রমভাবে উঠে এসেছে বিচার বিভাগ।

চিঠিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন দিল্লি হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি ও ল’ কমিশন অব ইন্ডিয়ার সাবেক চেয়ারপারসন এপি শাহ, মাদ্রাজ হাইকোর্টে দায়িত্ব পালন করা বিচারপতি কে চন্দ্রু, কর্নাটক হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার। ৬ জন আইনজীবী হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী শান্তি ভূষণ, প্রশান্ত ভূষণ, ইন্দিরা জয়সিং, চন্দর উদয় সিং, শ্রীরাম পাঁচু এবং আনন্দ গ্রোভার।