বাংলাদেশসহ এশিয়া অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের নেবে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশসহ এশিয়া অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের নেবে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশসহ এ অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের দেয়া এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে।

ব্লিঙ্কেন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্মিলিত মানবিক সহায়তার অত্যাবশ্যক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা বাংলাদেশসহ ওই অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে কাজ করছি। যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জীবনকে নতুনভাবে গড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, এসব শরণার্থীর পুনর্বাসন বৃদ্ধিতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, যাতে যুক্তরাষ্ট্রে তারা তাদের জীবন নতুন করে গড়ে তুলতে পারেন। তবে কবে নাগাদ এবং কি পরিমাণ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলেননি। এতে তিনি ইন্ডিপেন্টেডন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে সমর্থন দেন।

ব্লিনকেন বলেন, রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমারের জনগণের স্বাধীনতা, অন্তভুক্তিমুলক গণতন্ত্রের সাধনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার অগ্রগতি, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি এবং সব মানুষের মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদা রক্ষায় সমর্থন দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, ৫ বছর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালিয়েছিল। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। ধর্ষণ করেছে। নির্যাতন করেছে। ব্যাপক মাত্রায় সহিংসতা করেছে। হত্যা করেছে রোহিঙ্গা কয়েক হাজার শিশু, নারী ও পুুরুষকে। কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

তার ভাষায়- এ বছর মার্চে আমি যুক্তরাষ্ট্রে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে বক্তব্য রেখেছি। এটা বলেছি, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে নৃশংসতা চালিয়েছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যার শামিল।

ব্লিঙ্কেন বলেন, মিয়ানমারের এই সেনাবাহিনীই গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির জনগণকে দমন, নির্যাতন ও হত্যা অব্যাহত রেখেছে। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে নস্যাৎ করার লক্ষ্য নিয়ে তারা এটা করছে। সম্প্রতি গণতন্ত্রপন্থী বিরোধী নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দেশটির জনগণের জীবনকে সংকটময় করে তোলার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত।

রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার সবার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা মাতৃভূমিতে নিরাপদে ফিরতে পারছে না—এ বিষয়টি অনুধাবন করে ২০১৭ সাল থেকে তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার নানা উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও অঞ্চলের অন্যান্য জায়গায় এই সংকটের শিকার ব্যক্তিদের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র ১৭০ কোটি ডলারের বেশি অর্থের জোগান দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারসহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া এই অঞ্চলের অন্যান্য সরকারের প্রতি সংহতি জানায় যুক্তরাষ্ট্র।