ইউক্রেনে আবারও ৭৬ মিসাইল ছুড়ল রাশিয়া, বিদ্যুৎহীন একাধিক শহর

ইউক্রেনে আবারও ৭৬ মিসাইল ছুড়ল রাশিয়া, বিদ্যুৎহীন একাধিক শহর

ইউক্রেনজুড়ে আবারও ৭৬টি মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের তরফ থেকে এসব মিসাইলের বেশিরভাগই ধ্বংস করে দেয়ার দাবি করা হয়েছে। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে মিসাইল হামলার পর বেশ কয়েকটি শহর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। হামলা হয়েছে রাজধানী কিয়েভ, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকভ, দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী ওডেসা এবং ক্রিভি রিহ শহরে। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জানিয়েছেন, অন্তত ৯টি বিদ্যুৎ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। মিসাইলের পাশাপাশি চালানো হয় ড্রোন হামলাও।

বিবিসি জানিয়েছে, হামলার দ্বিতীয় দিনে খারকভে বিদ্যুৎ ফিরে আসতে শুরু করেছে। শহরটির মেয়র জানান, হামলায় খারকভের বড় ক্ষতি হয়েছে। তবে এক দিনের মধ্যেই ৫৫ শতাংশ বাসিন্দার বাড়িতে বিদ্যুৎ ফিরে গেছে। আনাস্তাসিয়া নামের এক বাসিন্দা জানান, শুক্রবার সকালে হামলা শুরু হয়। দুই মাস বয়সী এক শিশুর মা তিনি।

হামলার পরপরই ঘরের লাইটগুলো বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এরপর একেবারে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ চলে যায়। এখনও সেই বিদ্যুৎ ফিরে আসেনি। এই মুহুর্তে খারকভে কোনও পানি নেই কারণ বিদ্যুৎ না থাকলে পাম্পিং স্টেশনগুলি কাজ করতে পারে না।

রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী। তবে ইউক্রেনের জাতীয় জ্বালানি কোম্পানি এক বিবৃতিতে বলেছে যে, সারা দেশে তাদের যতো গ্রাহক আছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি এসব হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা প্রথমে জানিয়েছিলেন, দেশটির বিভিন্ন শহরে ৬০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে পরে এই সংখ্যা ৭৬ বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা রাশিয়ার এ হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ভবিষ্যতেও এমন হামলা অব্যাহত থাকবে। তাদের দাবি, রাশিয়া যখন রণক্ষেত্রে পরাজিত হচ্ছে, তখন গত দু’মাস ধরে তারা এই কৌশল নিয়েছে। রাশিয়া এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যাতে ইউক্রেন সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু সেরকম কিছু হবে না। তাদের এই কৌশল কাজ করবে না।

খারকভের পাশাপাশি হামলা হয়েছে ওডেসা, ক্রিভি রিহ এবং কিয়েভেও। কিয়েভ আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেকসেই কুলেবা বলেছেন, শত্রুরা বড় ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে। এছাড়া রাশিয়ার হামলায় ক্রিভি রিহ শহরে দুজন নিহত হয়েছে। দক্ষিণের খেরসন শহরেও একজন প্রাণ হারিয়েছেন। হামলার ফলে শহরের একটি আবাসিক এলাকায় বেশ কিছু অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আগুন ধরে যায়। রাজধানী কিয়েভে বেশ কিছু বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে এসব হামলার কারণে পানির সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মেট্রো সার্ভিসও। ওডেসা শহরের পরিস্থিতিও একই রকমের।