নাইজারে নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিচ্ছেন অভ্যুত্থানের নেতা, দূতাবাসকর্মীদের আংশিক তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

নাইজারে নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিচ্ছেন অভ্যুত্থানের নেতা, দূতাবাসকর্মীদের আংশিক তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আফ্রিকার দেশ নাইজারে ভয়াবহ অবস্থা। গত সপ্তাহে সেখানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার বিক্ষোভকারীরা হামলা চালিয়েছে ফরাসি দূতাবাসে। এমন অবস্থায় সেখান থেকে কয়েকশ বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করেছে ফ্রান্স। তবে সর্বশেষ অনাবশ্যক এমন কর্মকর্তা, কর্মচারীকে ওই দেশে অবস্থিত দূতাবাস থেকে উদ্ধার করার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, সামরিক অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদু রহমানে তচিয়ানি আভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেকোনো হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজোমের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, নাইজার থেকে দূতাবাসের কিছু কর্মীকে তুলে নেয়া সত্ত্বেও রাজধানী নিয়ামিতে দূতাবাস উন্মুক্ত থাকবে। তিনি আরও বলেন, নাইজারের জনগণের প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নাইজারে বড় মানবিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক দাতা যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে তারা সতর্ক করেছে। বলেছে, সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে সবরকম সহযোগিতা স্থগিত করে দেয়া হতে পারে। ওদিকে এরই মধ্যে নাইজারে আর্থিক ও উন্নয়নখাতে সহায়তা স্থগিত করে দিয়েছে ফ্রান্স ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে এরই মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার ১৫টি দেশের বাণিজ্যিক সংগঠন ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোয়াস) দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর অধীনে নাইজারের সঙ্গে সব রকম বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধ থাকবে। ওই অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দেশটির যত সম্পদ আছে তা জব্দ কথা হবে।

কিন্তু নিষেধাজ্ঞাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন সামরিক অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল তচিয়ানি। বুধবার টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি পুরোপুরিভাবে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে যেকোন দিক থেকে, যে হুমকিই আসুক, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। নিষেধাজ্ঞাকে নিষ্ঠুর এবং অন্যায় হিসেবে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নাইজারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবমাননা করা হয়েছে। দেশটিকে শাসনের অনুপযোগী করছে তারা।

নাইজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার আলোচনা করেছেন ইকোয়াসের সামরিক প্রধানরা। এই আলাচনায় দেশটিতে সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়। তারা বলেছেন, এক্ষেত্রে ‘অ্যাকশন’ হতে পারে শেষ অবলম্বন।