ভারতের সঙ্গে বিরোধকে একপাশে সরিয়ে রেখে জি২০তে চীনকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

ভারতের সঙ্গে বিরোধকে একপাশে সরিয়ে রেখে জি২০তে চীনকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেছেন, এটা চীনের বিষয় যে, তারা এমন ভূমিকার পরিবর্তে ভণ্ডুল করার ভূমিকা রাখতে চায় কি-না। নয়া দিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উপস্থিত হবেন না, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর এমন মন্তব্য করেছেন জ্যাক সুলিভান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

৯ ও ১০ই সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে হতে যাচ্ছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। এতে শি জিনপিং উপস্থিত হচ্ছেন না, এটা চীনের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং চীনা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। কিন্তু কী জন্যে শি জিনপিং সম্মেলনে আসছেন না তার প্রকৃত কারণ ভারত বা চীন কেউই দিচ্ছে না। তবে এই দুটি দেশের মধ্যে কুয়াশাচ্ছন্ন সম্পর্ক আছে। ২০২০ সালের পর থেকে তাদের মধ্যকার উত্তেজনা বেড়েছে। সম্প্রতি এর অবনতি হয়েছে।

২০২০ সালে দুই দেশের সেনারা লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। দুই দেশের মধ্যে বিরোধের প্রথম কারণ বিরোধপূর্ণ প্রায় ৩৪৪০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা। এই অঞ্চলটি নাজুকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেকোনো পয়েন্টে তাই এক দেশের সেনারা অন্যদেশের সেনাদের মুখোমুখি অবস্থানে পড়েন।

গত সপ্তাহে চীন একটি অফিসিয়াল ম্যাপ প্রচার করে। এতে ভারতের কিছু ভূখণ্ডকে চীনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর জবাবে বেইজিং থেকে বলা হয়, এ ইস্যুতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে বিরত থাকা উচিত দিল্লির।

সংবাদ সম্মেলনে জ্যাক সুলিভানের কাছে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন। তিনি জানতে চান, চীন ও ভারতের মধ্যকার উত্তেজনা কি এই সামিটে কোনো ছায়া ফেলবে? জবাবে জ্যাক সুলিভান বলেন, এটা চীনের বিষয়। যদি চীন আসতে চায় এবং ভণ্ডুল করার ভূমিকা পালন করতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাদের জন্য সেই সুযোগ আছে। তিনি আরও যোগ করেন এই সামিটের চেয়ার হলো ভারত। যুক্তরাষ্ট্র ও জি২০ ভুক্ত সব সদস্যই চীনকে এই সম্মেলনে জলবায়ু, বহুপক্ষীয় ব্যাংকের উন্নয়ন সংস্কার, ঋণের বিষয়ে রিলিফ, প্রযুক্তি নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে আহ্বান জানায়। এক্ষেত্রে তাদের ভূ-রাজনৈতিক প্রশ্নকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। বাস্তব দৃষ্টি হবে সমস্যার সমাধান এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কিছু করা।

জি২০ হলো বিশ্ব অর্থনীতির একটি বড় প্লাটফর্ম। সেখানে অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। নিজেদের মধ্যে জি২০ ভুক্ত দেশগুলোতে আছে বিশ্বের অর্থনীতির শতকরা ৮৫ ভাগ এবং বাণিজ্যে আছে শতকরা ৭৫ ভাগ। এখানে আছে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ।