ঢাকা, ১৮ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়ার পর কিশোর ফুটবল দলের সদস্যরা মাটি খুঁড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; দুর্বিষহ ওই সময়টাকে বৃষ্টির পানি খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছে তাদের।
হাসপাতাল ছাড়ার পর প্রথমবারের মতো এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ওই ফুটবল দলের কোচ এক্কাপল চ্যানতাওন ও দলের আরেক সদস্য একথা জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রুদ্ধশ্বাস অভিযানে উদ্ধার হওয়ার পর গত ১০ জুলাই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় চিয়াং প্রদেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কোচসহ ফুটবল দলটির ১২ সদস্যকে।
স্থানীয় সময় বুধবারই চিয়াং রাই হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি পান তারা। পরে ওই ঘটনা নিয়ে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের পর কিশোররা বাড়ি ফেরে।
সংবাদ সম্মেলনের জন্য হাসপাতালের একটি কক্ষ ফুটবল মাঠের মতো করে সাজানো হয়। তবে সংবাদ সম্মেলনে উন্মুক্ত প্রশ্নের সুযোগ রাখা হয়নি। কোনো প্রশ্ন যাতে কিশোরদের মনে বিরূপ প্রভাব না ফেলে এজন্য উপস্থিত দেশি বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে আগেই প্রশ্ন নেয় কর্তৃপক্ষ। পরে সেগুলো মনোবিদরা পরীক্ষা করে কিছু প্রশ্ন অনুমোদন করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কোচ এক্কাপল বলেন, উদ্ধারকারীর কখন পৌঁছাবেন- আমরা শুধু সেই আশায় বসে ছিলাম না। আমরাও মাটি খুঁড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেছি।
ফুটবল দলের আরেক সদস্য সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা বৃষ্টির পানি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। এভাবেই জীবনধারণ করতে হয়েছে।
আদুল সাম-অন নামে এক কিশোর বলেন, মুহূর্তটা ছিল ম্যাজিকের মতো। পথ বানাতে পাথর ঘষছিলাম আমরা। এর মধ্যে কারও যেন কণ্ঠ শুনতে পেলাম! আমি তাদের দেখে 'হ্যালো' বললাম।
চিয়াং রাইয়ের প্রাদেশিক গভর্নর প্রাচন প্রাৎসুকান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা গণমাধ্যমের সঙ্গে এই কিশোরদের একমাত্র আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার। এরপর তারা আর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবে না।
এ সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো বিষয়টি নিয়ে জনসম্মুখে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বললেন কিশোর ফুটবল দলের কোচ ও ফুটবল দলের সদস্যরা।
গত ২৩ জুন ১২ সদস্যের ওই কিশোর ফুটবল দল এবং তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচ থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ চিয়াং রাইয়ের 'থাম লুয়াং' গুহায় প্রবেশ করেন।
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে গুহার ভেতর পানি ঢুকে পড়লে দলটি সেখানে আটকা পড়ে। ১০ দিন পর ডুবুরিরা গুহায় তাদের সন্ধান পান। ওই কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
এরপর এক পর্যায়ে ১২ কিশোর ও তাদের কোচকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে থাই কর্তৃপক্ষ। আটকে পড়া কিশোরদের কাছে অক্সিজেন সরবরাহ করে ফেরার পথে অক্সিজেন ঘাটতির কারণে এক ডুবুরির মৃত্যুও হয়।
গত ১০ জুলাই তৃতীয় দফায় অভিযান চালিয়ে সর্বশেষ চার কিশোর ও তাদের কোচকে গুহা থেকে বের করে আনা হয়। এর মধ্য দিয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযানের সফল সমাপ্তি ঘটে। গুহা থেকে উদ্ধারের পর কিশোরদের ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২৩৫৯ঘ.)