বিএফইউজে-ডিইউজের বিবৃতি

নবম ওয়েজবোর্ড প্রত্যাখ্যান করেছে বিএফইউজে ও ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ

নবম ওয়েজবোর্ড প্রত্যাখ্যান করেছে বিএফইউজে ও ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ

সংবাদকর্মীদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মালিক পক্ষের আবদার রক্ষা করে প্রকাশিত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে এ গেজেট বাতিল করে সংশোধিত গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। তা না হলে সাংবাদিক সমাজেকে সাথে নিয়ে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে উল্লেখ করেন তারা।

রবিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব এম আবদুল্লাহ এবং ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমে কর্মরত কর্মীদের যুগ যুগ ধরে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রকাশ করা গেজেটের তীব্র সমালোচনা করেন।

তারা বলেন, সাংবাদিক সমাজ দীর্ঘ দিন নবম ওয়েজ বোর্ডের মাধ্যম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। সরকার ও মালিক পক্ষের টালবাহানা ও আইনী জটিলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর গেজেটের মাধ্যমে নতুন ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা হলে সাংবাদিক সমাজ সাধুবাদ ও স্বাগত জানানোর কথা। কিন্তু আমরা গভীর পরিতাপ ও বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত গেজেটে সাংবাদিকরা বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে তার কয়েকটি কেড়ে নেয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিপূর্বের সব কয়টি ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদে সাংবাদকিদের অবসর, চাকরিচ্যুতি অথবা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দু’টি করে গ্র্যাচুইটির বিধান রাখা হয়েছিল। এবারও নবম ওয়েজবোর্ড অনুরূপ সুপারিশ করেছে। তাছাড়া সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মীদের আয়কর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছিল। মালিকপক্ষ প্রতিটি ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের সময়েই এ দু’টি বিষয়ে সংশোধন দাবি করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের গেজেটে সাংবাদিকদের গ্র্যাচুইটি দু’টি থেকে কমিয়ে একটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। আয়কর পরিশোধের বিষয়টি এ প্রথম সাংবাদিকদের ঘাড়ে তুলে দেয়া হয়েছে। এটা করা হয়েছে সরকার গঠিত ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ পাশ কাটিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে, যা অগ্রহণযোগ্য ও অনভিপ্রেত। চতুর্থ ওয়েজবোর্ড কার্যকরের সময় আয়কর মালিক পক্ষ থেকে দেয়ার বিধান চ্যালেঞ্জ করা হলে তা হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে সাংবাদিকদের পক্ষে রায় হয়। এখনো মালিকপক্ষের একটি রিটের কারণে বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন। এমতাবস্থায় এ বিধান পরিবর্তন করা বেআইনী।

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, যেখানে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার জোরালো দাবি উচ্চারিত হচ্ছে সেখানে সুবিধা কেড়ে নেয়ার মতো নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়েছে নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেটে। শুধু তাই নয়, এ যাবত প্রতিটি ওয়েজবোর্ড কার্যকর করা হয়েছে মহার্ঘ্যভাতা ঘোষণার তারিখ থেকে। ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন ৪৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই দিন থেকেই ওয়েজবোর্ড কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু গেজেটে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে এক বছর পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে।

এছাড়া সাংবাদিকদের দাবি ছিল অষ্টম ওয়েজবোর্ডে সংবাদপত্রের ক্যাটাগরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাতুর্যের আশ্রয় নিয়ে সাংবাদিকদের বেতন স্কেলে বৈষম্য সৃষ্টি করা বিধান সংশোধনের। নবম ওয়েজবোর্ডে তাও উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে প্রকাশিত গেজেট বাতিল করে সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে অন্তর্ভুক্ত করে ওয়েজবোর্ড পুনর্গঠন ও সংশোধিত গেজেট প্রকাশের দাবি জানান। তা না হলে সাংবাদিক সমাজ আন্দোলনের মাধ্যমে এ ধরনের হঠকারী পদক্ষেপের প্রতিকার করবে।

এমআই