সাংবাদিক কাজলকে অবিলম্বে মুক্তি দাবি আরএসএফের

সাংবাদিক কাজলকে অবিলম্বে মুক্তি দাবি আরএসএফের

সাংবাদিক শফিকুল কাজলকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। একই সঙ্গে কিভাবে তাকে অপহরণ করে ৫৪ দিন আটকে রাখা হয়েছিল সে বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে। পিতার কাছ থেকে ফোন পাওয়া নিয়ে সাংবাদিক কাজলের ছেলে মনোরম পলক আরএসএফকে বলেছেন, ফোন করে প্রথমেই তিনি আমাকে বলেছেন যে, তিনি বেঁচে আছেন। একথাটা নিজে বলতে পারার জন্য বেশ খুশি ছিলেন তিনি।

আরএসএফ তার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর যশোরের বেনাপোলে বাংলাদেশ সীমান্ত চৌকি থেকে নিজের ছেলেকে ফোন করেছিলেন শফিকুল ইসলাম কাজল। সেখানে ২রা মে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নোম্যান্সল্যান্ডে সীমান্তরক্ষীরা চোখ, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। যেহেতু তার কাছে কোনো পাসপোর্ট ছিল না, তাই তাকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় যশোরে। যশোর জেলা আদালতে নেয়া হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অধীনে তাকে আটক রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।

এ ধারায় সন্দেহজনক কারণে কাউকে আটক রাখার অনুমতি দেয়া আছে। আগামী ১৯ শে মের আগে তাকে আর আদালতে তোলা হচ্ছেনা।

এ ঘটনায় আরএসএফের এশিয়া প্যাসিফিক ডেস্কের প্রধান ডানিয়েল বাস্টার্ড বলেছেন, একদিকে শফিকুল কাজলকে নিরাপদে এবং সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যাওয়া যখন স্বস্তির বিষয়, তখন তাকে গ্রেপ্তার করা চরম হতাশার। আমরা বাংলাদেশের আদালতের কাছে অনুরোধ করবো এই সাংবাদিককে অবিলম্বে মুক্তি দিন। একই সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করুন, যারা তদন্ত করে বের করবে এতটা দিন তাকে কিভাবে অপহরণ করে রাখা হয়েছিল। এই অপহরণ অত্যন্ত রহস্যময়।

মনোরম পলক আরএসএফ’কে বলেছেন, তার পিতার সাথে তার সাক্ষাত হয়েছে। তবে সেই সাক্ষাতটি ছিল খুব সংক্ষিপ্ত। কিভাবে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছিলেন না তার পিতা। পলক বলেন, তার পিতাকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছে। যা ভীতিকর।

ঢাকাভিত্তিক একজন ফটোগ্রাফার এবং দৈনিক পক্ষকাল পত্রিকার সম্পাদক শফিকুল কাজল। ১০ই মার্চ রাতে তিনি অফিস ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান। পরের দিন তার পরিবার একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।

তিনি নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপি সাইফুজ্জামান শিখর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। অভিযোগ করেন, ঢাকার একটি বিলাসবহুল হোটেলে নারী এসকর্ট সার্ভিসের সঙ্গে তার যুক্ত থাকা নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছেন কাজল। একই মামলায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও তার একজন রিপোর্টারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আরএসএফের ২০২০ ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫১তম। ২০১৯ সালের চেয়ে এই সূচকে এক ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

এমজে/