মাওলানা সাদ ইজতেমায় যাচ্ছেন না : ডিএমপি

মাওলানা সাদ ইজতেমায় যাচ্ছেন না : ডিএমপি

ঢাকা, ১১ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : তাবলিগ কর্মী ও কওমিপন্থী আলেমদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ টঙ্গীর তুরাগতীরের মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমায় যাওয়া থেকে বিরত থাকছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সরকারের যে সিদ্ধান্ত, তাতে দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় যাচ্ছেন না। তাঁকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে রাখা হয়েছে।’

ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মুহাম্মদ সাদের বাংলাদেশে আসা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ দুই গ্রুপের সৃষ্টি হয়। সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ ইজতেমায় অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন—এমন বক্তব্য দিয়ে গতকাল বুধবার সকাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গোলচত্বরের পূর্ব পাশে বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা। তাঁরা দাবি তোলেন, মাওলানা সাদ ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বিমানবন্দর থেকে দিল্লিতে ফেরত পাঠাতে হবে।

আলেম ও মুসল্লিদের বিক্ষোভ-সমাবেশ ও অবরোধের ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়তে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ যাত্রী ছাড়াও দেশের বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের সারা দিন চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হন।

যেখানে আলেমরা বিক্ষোভ করেন, তার পেছনে একটি ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘মাওলানা সাদ সাহেবের সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিশ্ব ইজতেমায় আসার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বস্তরের ইমানদারদের তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ-সমাবেশ’।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মাহফুজুল হক ঘোষণা করেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি মাওলানা সাদ বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল মসজিদে চলে গেছেন। তাই এখানের জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে এখানকার বিক্ষোভ-সমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করছি।’

‘পাশাপাশি আমরা মাওলানা সাদকে ঠেকাতে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাএলাকায় অবস্থান করব।’

পরে বিকেলে এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মাওলানা সাদের আগমন নিয়ে তাবলিগ জামাতে দুটি ধারা দেখা যাচ্ছে। এক অংশ চায়, তিনি যেন ইজতেমায় অংশ নেন। অপর অংশ চায়, যেকোনো মূল্যেই হোক তাঁর অংশগ্রহণ ঠেকাতে। এটি হচ্ছে তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা এ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা চাই তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এর শান্তিপূর্ণ সমাধান করবেন।’

আগামীকাল শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে তুরাগতীরে দুই ধাপের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ শুরু হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারও দুই পর্বে ইজতেমা হতে যাচ্ছে। প্রথমবার দেশের মোট ১৬টি জেলা অংশ নেবে। চার দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে আরো ১৬ জেলা অংশ নেবে।

আগামী বছরের বিশ্ব ইজতেমা বাকি ৩২ জেলা নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১১২৫ঘ.)