গাজীপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, আহত ১২

গাজীপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, আহত ১২

গাজীপুর, ২৮ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : গাজীপুরে বিএনপির যৌথ কর্মিসভাস্থল থেকে বের হওয়ার সময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের আকস্মিক লাঠিপেটা ও হুড়াহুড়িতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে।

পুলিশের দাবি, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সভাস্থলে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠিপেটা এবং কয়েকজনকে আটক করে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মাজহারুল আলম জানান, গাজীপুর জেলা শহরের মধ্যছায়াবীথি এলাকার ট্রাস্ট কমিউনিটি সেন্টারে রবিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে জেলা বিএনপির উদ্যোগে যৌথ কর্মিসভা শুরু হয়। গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মো. জয়নুল আবেদীন ফারুক।

মাজহারুল আলম জানান, অনুষ্ঠান চলাকালেই পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এতে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। একপর্যায়ে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে দুপুর ১টার দিকে ফটক দিয়ে নেতা-কর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারটি ত্যাগ করা শুরু করে। পুলিশ আচমকা তাদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পেছনের সীমানা প্রাচীর থেকে ছোট ফটক খুলে পালিয়ে যায়। এতে প্রায় ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়। পুলিশ সেখান থেকে গাজীপুর সদর থানা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পূবাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সোলায়মান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গাজী সুলতান শাহজাহান জুয়েল (২৮), ছাত্রদল কর্মী ফারুক (২৭), এরশাদ সরকার (২৫), কবির হোসেন (২৮) ও দীপুসহ (২৫) বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।

মাজহারুল আলম আরো বলেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্ভাব্য রায় প্রদানকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীরা যখন সংগঠিত হচ্ছিল। তখন দলীয় নেতা-কর্মীদের একতা ও চাঙ্গা হওয়াকে দমিয়ে দিতে ও প্যানিক সৃষ্টি করার জন্যই পুলিশ ওই হামলা করে থাকতে পারে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মাজহারুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান ফকির, সদর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সুরুজ আহমেদ, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হান্নান মিয়া হান্নু প্রমুখ।


আহতদের মধ্যে জেলা বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. নাহিন আহমেদ মমতাজী (৪৫), শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম মোল্লাহ (২৮), পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, জেলা ছাত্রদলকর্মী ফারুক আহমদ (২৭), এরশাদ সরকার (২৫), মো. কবির (২৮) ও দীপু (২৫) রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি কোনো অনুমোদন ছাড়াই ওই কর্মিসভা আয়োজন করে। সভা চলাকালে সেখানে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ সেখানে যায় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন পুলিশের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো কোন্দল সৃষ্টি হয়নি এবং নিজেদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। এ ধরনের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পুলিশ তাদের ন্যক্কারজনক ঘটনা আড়াল করতেই এমন বক্তব্য দিচ্ছে।

 

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯২৮ঘ.)