মেঘ জমলেই সরবরাহ বন্ধ

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে চরম দুর্ভোগে

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে চরম দুর্ভোগে

বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার করুণ হাল এ অঞ্চলের লাখ লাখ গ্রাহককে যথেষ্ঠ দুর্ভোগে রেখেছে। খোদ বরিশাল মহানগরীতে এখনো আকাশে মেঘ জমলে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দিনরাত বিদ্যুৎ নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় নাকাল সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলবাসী। অথচ সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। এমনকি অনেক পল্লী এলাকার গ্রাহকদের চেয়ে শহরে দুর্ভোগ বেশি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

দুর্বল বিতরণ ব্যবস্থা আর নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের সাথে দীর্ঘদিনের পুরনো বিতরণ ও সরবারহ পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে এবার ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলনা। ঈদের দিনসহ এর আগে পরের দিনগুলোতেও নগরী জুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে ক্রমশ বৃদ্ধি করেছে। ঈদের আগের দিন রূপাতলী কাশিপুর ৩৩ হাজার ভোল্টের ট্রন্সমিশন লাইনে গোলযোগের কারণে রাতভর নগরীর ৭টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যাহত হয়। তবে অনেক চেষ্টার পরে ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে দুটি সাব-স্টেশনই চালু করা সম্ভব হওয়ায় নগরবাসী হাফ ছেড়ে বাঁচেন।

তবে এরপরেও দিনভরই নগরীর বিভিন্ন ফিডারে ছোট-বড় গোলযোগ অব্যাহত ছিল। ট্রান্সফর্মারের ফিউজ পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে জাম্পার ও লুপ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ একাধিকবার ১১ কেভি লাইনগুলো ট্রিপ করায় নগরবাসীকে বার বারই বিদ্যুৎ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এমনকি ঈদের আগের দিন ভোলা ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশন ট্রিপ করায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ফ্রিকোয়েন্সি হ্রাস পেয়ে ভোল্টেজ নেমে যায়। ফলে গ্রাহকদের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। তবে দিনভর চেষ্টায় পাওয়ার স্টেশনটি চালু করার ফলে ভোল্টেজ সঙ্কট দুর হলেও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রæটির কারণে বরিশাল মহানগরীসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ঠ নাজুক। খোদ বরিশাল মহানগরীর প্রতিটি ফিডারে দিনরাতে ৮-১০ বার বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ঈদের আগে পর পর দুদিন নগরীর হাতেম আলী কলেজ ফিডারটি দু’ঘন্টা করে বন্ধ রেখে লাইনের পাশের গাছের ডালপালা ছাটাই করা হলেও ঐ ফিডারে গোলযোগ থেমে থাকেনি।

বরিশাল মহানগরীর প্রায় একলাখ গ্রাহককে যেসব ১১/.০৪ ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে, তার অন্তত অর্ধেকই ওভারলেডেড হয়ে আছে। ফলে এ নগরীতে প্রতিমাসে গড়ে অন্তত ৫টি ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাচ্ছে ওভারলোডেড হয়ে। এসব বিতরণ ট্রান্সফর্মারের ড্রপ আওউটগুলো ত্রæটিপূর্ণ। একটি ট্রান্সফর্মারের ফিউজ পুড়ে গেলে পুরো ফিডার বন্ধ করেই তা ঠিক করতে হয়। কোন ট্রান্সফর্মারেই এমসিপি না থাকায় তা সার্বক্ষণিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। একারণেও ট্রান্সফর্মারগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এমআই