সিলেট সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

সিলেট সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

আসাম সীমান্ত লাগোয়া সিলেটের জকিগঞ্জের পুরোটাই। বিস্তৃত প্রায় ৫৬ কিলোমিটার এলাকা। বিয়ানীবাজারের ১২ কিলোমিটার এলাকাও আসাম সীমান্ত। কানাইঘাটেরও কিছু এলাকা আসামের সীমান্তবর্তী। ফলে বাংলাদেশে আসাম সীমান্তের গেটওয়ে হচ্ছে সিলেটের ওই তিন উপজেলার সীমান্ত এলাকা। আসামের নাগরিকত্বের তালিকা প্রকাশের পর থেকেই সিলেটের ওইসব সীমান্ত এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক মানুষ পুশের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এ কারণে গতকাল সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। কেউ যাতে অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শুধু বিজিবিই নয়, স্থানীয়ভাবে লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। এ নিয়ে জকিগঞ্জের কয়েকটি সীমান্ত গ্রামে মসজিদের মাইকে মাইকিং করে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আসাম প্রদেশের শিলচর, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি এলাকার সঙ্গে সিলেটের সীমান্ত যোগাযোগ। এসব এলাকার মানুষও সিলেট ভাষাভাষি। তারা সিলেটি ভাষায়ই কথা বলেন। দুই দেশ বিভক্ত করে দিয়েছে কুশিয়ারা। নদীর একপাড় হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার। অপরপাশে ভারতের আসামের করিমগঞ্জ। এসব এলাকায় বাংলাদেশের বিজিবি’র প্রায় ২০টির মতো ক্যাম্প রয়েছে। গতকাল সকালে আসামের নাগরিকত্ব তালিকা প্রকাশের পর থেকে ভারতের দিকে নজর ছিল সীমান্তবাসীর।

জকিগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, সতর্ক থাকার নির্দেশনা তারা উপর মহল থেকে পেয়েছেন। সব ক্যাম্পেই সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ কারণে গতকাল সকাল থেকে তারা নজরদাবি বাড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে টহলও জোরদার করেন। তিনি বলেন, তার এলাকায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অবৈধ পথে প্রবেশের সুযোগ পায়নি। কিংবা চেষ্টাও করেনি কেউ। সবই স্বাভাবিক ভাবে চলেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। কিছু কিছু এলাকায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা করে মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক রয়েছে জকিগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরাও।

জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, জোরপূর্বক যাতে পুশব্যাক না হয় সে কারণে আমরা সতর্ক আছি। তবে এনআরসি হচ্ছে ভারতের আসামের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বর্তমান সরকার সঠিকভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে। জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী খলিল উদ্দিন জানান, কাউকে পুশব্যাক করলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের যে সহযোগিতা চাওয়া হবে তা আমরা করবো।

সিলেটের ১৯ রাইফেল ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন জানিয়েছেন, সীমান্তে যাতে কেউ অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিজিবি আগে থেকেই সতর্ক ছিল। গতকাল থেকে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি বিজিবি সতর্ক রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পুশব্যাক করার মতো কোনো খবর তাদের কাছে আসেনি। তিনি বলেন, পুশব্যাক করার খবর অনেক ক্ষেত্রেই আগে চলে আসে। এ নিয়ে প্রস্তুতিও থাকে। কিন্তু এখনো খবর না আসায় সীমান্তে স্বাভাবিক টহল ও নিরাপত্তা বিরাজমান রয়েছে।

এমজে/