সোনাইছড়ি-ঘুমধুম সড়কে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধস

সোনাইছড়ি-ঘুমধুম সড়কে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধস

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে সোনাইছড়ি হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত সড়কটির কাজ বুঝে নেয়ার আগেই বিভিন্ন স্থানে ধস ও পানিতে তলিয়ে গেছে অধিকাংশ সড়ক। নিম্নমানের কাজ, সীমাহীন অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণেই সড়কটি ভেঙে গেছে বলে স্থানীয়দের দাবী। বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এলজিইডি কাজটি পুনরায় করার আশ্বাস দিলেও কাজের টেকসইয়তা নিয়ে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন সচেতন সমাজ।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সি.এইচ.টি.আর.ডি.পি-২ প্রকল্পের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু (৩০+৫৮৯) সড়কে ২০১৭-১৮ অর্থ বছর প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দে ১৮ মিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের টেন্ডার পায় বান্দরবানের আবছার কনস্ট্রাকশন। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও এখনো সম্পূর্ণ কাজ সম্পাদন করতে পারেনি ঠিকাদার। বরং কাজ শেষ না হতেই ধসে গেছে সড়ক।

এদিকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় ইউ.টি মং ও মিল্টন কনস্ট্রাকশনের নামে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে আর.আই.ডি.পি.সি.এইচ.টি-২ প্রকল্পের তুমব্রু বাজার ক্যাম্প রোড়ে ৩৩ মিটার ব্রিজ ও এইচবিবি করণ কাজ পায়। সব কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি লোকদেখানো কাজের মাধ্যমে মূল বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে ঠিকাদাররা।

সরেজমিনে সড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, দুটি কাজ যেখানে হয়েছে সেখানে কম জনবসতির কারণে অনেকটা বিনা বাধায় অনিয়মের মাধ্যমে কাজ শেষ করে ঠিকাদার। যার কারণে অল্প বৃষ্টিতে পিচঢালা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তে পরিণত হয়েছে। রাস্তার দু’পাশে মাটি ধরে রাখার জন্য দেওয়া হালকা ব্লক অনেক স্থানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত সড়কটি পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির অগ্রধিকার প্রকল্প। উপজেলা সদরের সাথে দুই ইউনিয়নকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে তিনি এই উদ্যোগ নেন। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারণে মানুষের স্বপ্নের সড়কটি ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এলজিইডি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহায়তায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করার কারণে সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থও অপচয় হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি এলজিইডির প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, গেল বন্যায় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে উপজেলায় প্রায় ৬ কোটি টাকার অধিক সড়কের ক্ষতি হয়েছে। সেই সময় ঘুমধুম সড়কেও কিছু কিছু জায়গায় ধস হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যেহেতু ঠিকাদার এখনো বুঝিয়ে দেয়নি তাই ঠিকাদার পুনরায় কাজগুলো করে দিবেন। নিম্নমানের কাজের জন্য নয়, মাটি সমস্যা ও স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সড়কের ভাঙন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এমজে/