রাজাকারের তালিকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি টিপুর নাম!

রাজাকারের তালিকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি টিপুর নাম!

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে গত রবিবার ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেটাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপুর নামও রয়েছে। প্রকাশিত তালিকায় রাজশাহী বিভাগের ৮৯ নম্বর তালিকায় (ক্রমিক নম্বর ৬০৬) তে পাঁচজনের নাম রয়েছে। এই সিরিয়ালের চতুর্থ ক্রমিক নম্বরে রয়েছে গোলাম আরিফ টিপুর নাম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌসুলি হওয়া সত্ত্বেও রাজাকারের তালিকায় নাম আসার বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে গোলাম আরিফ টিপু সোমবার বেলা ১২ টার দিকে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এটা শুনে বিস্মিত হয়েছি। এটা কি করে সম্ভব? আমি জীবনে কখনো ওদের লাইনে যাইনি। রাজাকারের তালিকায় আমার নাম আসবে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি এটার শক্ত প্রতিবাদ করবো।

৮৯ নম্বর ক্রমিকে থাকা অপর চারজন হলেন- অ্যাডভোকেট মহসিন আলী, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুর রউফ ও পুলিশ কর্মকর্তা এস এস আবু তালেব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই পাঁচজন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ। অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের তাঁর পরিবারের পাঁচজন সদস্য মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহত হন। ওই সময় আব্দুস সালাম পাকিস্তানি হানাদারদের ভয়ে ভারত পালিয়েছিলেন। যদিও এই ৮৯ নম্বর তালিকার মন্তব্যের ঘরে লেখা আছে তাদের অব্যাহতি দিতে জেলা কমিটি আবেদন করেছিল। এর বাইরে কোনো তথ্য নেই।

তালিকায় এসব ব্যক্তির নাম যেভাবেই আসুক না কেন সেটি লজ্জাজনক বলে দাবি করেছেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের পরিবারের সদস্য আরিফুল হক কুমার।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই তালিকায় কেন আসবে এসব ব্যক্তির নাম। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, আবার যিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর—তাঁর নাম কেন আসবে। হয়তো রাজাকাররা এই তালিকা তৈরিতে কাজ করেছেন।’

রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ওয়ালিউর রহমান বাবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন তাঁদের নামও যদি তালিকায় থাকে, সেটিও হবে চরম লজ্জাজনক। কেন তাঁদের নাম এ তালিকায় উঠে এলো, কোন প্রসঙ্গে এলে তা বিস্তারিত উল্লেখ নাই।’

রাজাকারের তালিকায় থাকা এসব নামের বিষয়ে গোলাম আরিফ টিপুর মেয়ে ডানা নাজলি গণমাধ্যমকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে এটা প্রকাশ হলো কিভাবে? ৮৯ ক্রমিকে যাদের নাম এসেছে তাদের সবার পরিবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। এডভোকেট আব্দুস সালামের পরিবারের ৫ জন মুক্তিযুদ্ধের সময় মারা গেছেন। তার নামও রাজাকরের তালিকায়! মনে হয়, ভুলে তাদের নাম রাজাকারদের তালিকায় এসেছে।