হেঁটে হেঁটে কারখানায় যাচ্ছে শত শত পোশাক শ্রমিক

হেঁটে হেঁটে কারখানায় যাচ্ছে শত শত পোশাক শ্রমিক

করোনাভাইরাসের আতঙ্ককে উপেক্ষা করে পেটের তাগিদ ও চাকরি বাঁচাতে গাজীপুর- আশুলিয়া ও ঢাকার পোশাক কারখানা গুলোর দিকে হেঁটে হেঁটে ছুটে চলেছেন জামালপুর, সরিষাবাড়ি, সিরাজগঞ্জ, ঘাটাইল, কালিহাতি, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত পোশাক শ্রমিক।

রবিবার (২৬ শে এপ্রিল) দুপুর ১ টা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে শনিবারের মতো আজকেও পোশাক শ্রমিকদের ঢাকামুখী ঢল। এতে বাহন হিসেবে চড়া মূল্যে কেউ কেউ অটোরিক্সা, ভ্যানগাড়ি ব্যবহার করলেও দু’টো পাঁ-ই অধিকাংশের একমাত্র ভরসা।

সিরাজগঞ্জ থেকে গাজীপুরের সফিপুরের উদ্দেশ্যে আসা পোশাক শ্রমিক স্বপ্না (৩৫) বলেন, ‘ভোরে বাড়ি থেকে বাইর হইছি। এই পর্যন্ত ( মির্জাপুর) আসতে ৬শ টাকা খরচ হইছে। রিক্সা ওয়ালারা অনেক বেশী ভাড়া নিতাছে, রাস্তায়তো গাড়ি নাই কি করুম। এহন টাকা শেষ তাই হাইটাই যাইতাছি।’

একই এলাকা থেকে আসা জহিরুল ইসলাম (৪২) কে তার ভিতরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয় কাজ করে কিনা জানতে চাইলে বলেন, করোনার চাইতে পেটের জ্বালা অনেক বেশী। বাঁচলে বাঁচুম না বাঁচলে নাই তয় চাকরি হারানো যাইবোনা। গার্মেন্ট খুলে দিয়ে রাস্তায় গাড়ি না নামানোর সমালোচনাও করেন তিনি।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) কর্তৃক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা একাধিক পোশাক শ্রমিকের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের সবাইকে অফিস থেকে কারখানায় কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। যোগ দিতে না পারলে দেখানো হয়েছে চাকরি হারানোর ভয়। তবে চাকরিতে যোগদান করা নিয়ে বেশিরভাগ পোশাক শ্রমিক অসন্তুষ্টি প্রকাশ না করলেও রাস্তায় গাড়ি না পেয়ে হেঁটে হেঁটে কারখানায় যাওয়ার অবর্ণনীয় কষ্টের কথা উল্লেখ করে সরকারের সমালোচনা করেন অনেকেই।

গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানা বলেন, মহাসড়ক দিয়ে পোশাক শ্রমিক ঢাকার দিকে যাওয়ার বিষয়টি তিনি দেখেছেন এবং সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন যেন দূর দূরান্ত থেকে কেউ ঢাকার দিকে না যান। দূর দূরান্ত থেকে আসা শ্রমিক বহনকারী কয়েকটি গাড়ি তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান।