প্রবল গতিতে সুন্দরবন উপকূলের দিকে এগুচ্ছে ‘আম্পান’

প্রবল গতিতে সুন্দরবন উপকূলের দিকে এগুচ্ছে ‘আম্পান’

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান প্রবল গতি সঞ্চার করে সুন্দরবন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।

মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়, দুপুর ১২টায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে থাকা ঘূর্ণিঝড় আম্পান আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে আজ শেষরাত হতে বুধবার বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

তবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (নৌ) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মোংলায় কোনো প্রভাব নেই।

এদিকে, বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ১১টি জাহাজ নোঙর করে রাখা হয়েছে। পণ্যবোঝাই জাহাজগুলোর খালাস বন্ধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় তিন জেলা খুলনায় ৩৬১, বাগেরহাটে ৩৩৪ ও সাতক্ষীরায় ৪৪৭ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, ‘আম্পানের কোনো প্রভাব খুলনা অঞ্চলে এখনও নেই। তবে আকাশে কিছু মেঘ জমেছে এবং বুধবারে প্রভাব পড়বে এ অঞ্চলে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’

উপকূলের উপজেলাগুলোর লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং চলছে। খুলনা সিভিল সার্জন অফিস ৯ উপজেলায় ১১৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানিয়েছেন, আম্পানে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা থাকবে। সাইক্লোন প্রিপার্ডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) আওতায় দুই হাজার ৪৬০ এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার এক হাজার ১০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। সে কারণে উপকূলীয় কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার সব স্কুল-কলেজকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর চাবি সংগ্রহ করে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের কাছে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক জোয়ার্দার জানান, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনার ৩৬১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের ১০৮, কয়রার ১১৬, পাইকগাছার ৪৫ ও বটিয়াঘাটার ২৩টিসহ ২৯২টি আশ্রয়কেন্দ্রকে আগেভাগেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে।