ভিন্ন পরিবেশে চট্টগ্রামে ঈদের নামাজ আদায়

ভিন্ন পরিবেশে চট্টগ্রামে ঈদের নামাজ আদায়

কবি সিকান্দার আবু জাফর পিতার কাছে ‘ঈদের চিঠি’-তে লিখেছিলেন: ‘ঈদের সালাম নিও, দোয়া করো/আগামী বছর কাটিয়ে উঠতে পারি যেন/এই তিক্ত বছরের সমস্ত ব্যর্থতা।/অন্ততঃ ঈদের দিন সাদাসিধে লুঙ্গি একখানি/একটি পাঞ্জাবী আর সাদা গোলটুপি/তোমাকে পাঠাতে যেন পারি; আর দিতে পারি পাঁচটি নগদ টাকা।’

চিঠির বর্ণনামতোই এসেছে এবারের ঈদ। চিরচেনা দৃশ্য- একসঙ্গে বসে সারি সারি মুসল্লির নামাজ আদায় আর শেষে কোলাকুলি-করমর্দন কিংবা বাসায় নিয়ে আপ্যায়ন-কোনটাই সম্ভব হচ্ছে না করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে।

গত ১৪ মে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার নির্দেশনা জারি করা হয়। এমনকি কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়। সেই নিয়ম মেনেই চট্টগ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর।

সোমবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরীর দামপাড়া জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে। ইমামতি করেন মসজিদের খতিব ক্বারী সাইয়েদ মাওলানা আবু তালেব মো. আলাউদ্দীন।

ঈদ জামাত শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এরপর দোয়া ও মোনাজাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশ-জাতিকে রক্ষায় মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করার পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত ও নিহতদের জন্য দোয়া করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত প্রতিবছর স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে নামাজের আয়োজন করে থাকলেও এবার তা হয়নি। পাশাপাশি নগরীর প্রায় সব উন্মুক্ত ময়দান বাদ দিয়ে ঈদ জামাত মসজিদে আয়োজন করা হয়েছে।

গত বছর সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের মাঠসহ নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ১৬৪টি মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রামবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহীবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে ঈদের মোট ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সকাল পৌনে ৯টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আহমেদুল হক। মুসল্লি বেশি থাকলে সকাল সাড়ে ৯টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফেজ আহমেদ রেজা।

এমজে/