যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের নির্যাতনে তিন কিশোর নিহত ও আরো অন্তত ১৪ জন আহতের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাতে যশোরের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন নিহত পারভেজ হাসান রাব্বির বাবা রোকা মিয়া।

তিনি খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার পশ্চিম সেনপাড়ার বাসিন্দা। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে। তবে আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, নিহত রাব্বীর বাবা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে আসামিদের নাম উল্লেখ করেননি। আসামি কারা হতে পারে সেটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

এর আগে সকালে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক সহকারী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমানসহ ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত তিন কিশোরের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, পুলিশ মরদেহ সমাজসেবা অধিদফতরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। সমাজসেবা অধিদফতর মরদেহ নিহতদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

সমাজসেবা অধিদফতরের যশোরের উপপরিচালক অসিত কুমার সাহা বলেন, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ১৫০ জনের ধারণ ক্ষমতা। সেখানে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৭৭ জন বন্দি রয়েছে। তিনজন নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রের ১০ কর্মকর্তা কর্মচারী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। কেন্দ্রে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। আমরা মনিটরিং করছি, যাতে বন্দিদের কোনো অসুবিধা না হয়।

সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আনসার সদস্য ও তাদের নির্দেশে কয়েকজন কিশোর অন্তত ১৮ জনকে বেধড়ক মারপিট করেন। মারপিট ও নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ফেলে রাখা হয়। কয়েকজন অচেতন থাকায় তারা অজ্ঞান হয়ে গেছে মনে করেন। তবে পরে বুঝতে পারেন তিনজন মারা গেছে। এরপর সন্ধ্যারাতে এক এক করে তাদের মরদেহ হাসপাতালে এনে রাখা হয়।

নিহতরা হচ্ছে- বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু প্রামাণিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)।